রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিন উদযাপন
যথাযথ মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করেছে ইতালির রোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। বিভিন্ন বর্ণিল কর্মসূচির মাধ্যমে উদযাপনের প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও করোনাভাইরাসের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবের ফলে জনসমাগমের ওপর ইতালি সরকারের কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে গতকাল মঙ্গলবার দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে সীমিত আকারে দিবসটি উদযাপন করা হয়।
রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) রাজীব ত্রিপুরার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরিকল্পিত বর্ণিল কর্মসূচির মধ্যে ছিল রোম শহরের মেয়রসহ বিদেশি গণ্যমান্য অতিথিদের উপস্থিতিতে এবং শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্বোধন অনুষ্ঠান, খোলা ট্রাকে অন্তত পাঁচটি রুটে ভ্রাম্যমাণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, দূতাবাস আলোকসজ্জাকরণ, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন ইত্যাদি। করোনাভাইরাসের কারণে এসব বর্ণিল অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব না হলেও অবস্থার উন্নতি হওয়া সাপেক্ষে বাস্তবায়ন করা হবে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার দূতাবাসে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর রাষ্ট্রদূত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াতের মাধ্যমে দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা শুরু হয়। এরপর দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর কর্মময় গৌরবান্বিত জীবনের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, এই মহামানব ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছেন। বাল্যকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন নির্ভীক, অমিত সাহসী এবং মানবদরদি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাঙালিকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি প্রদান করা। গণমানুষের এ অধিকার আদায়ের জন্য তিনি সারাজীবন আন্দোলন করেছেন এবং বিভিন্ন মেয়াদে ব্রিটিশ ও পাকিস্তানের কারাগারে কেটেছে প্রায় ১৩ বছর। বঙ্গবন্ধুর সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব ও ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্ব সমগ্র জাতিকে একসূত্রে গ্রথিত করেছিল, যার ফলে আমরা পেয়েছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।’
আবদুস সোবহান সিকদার বলেন, ‘স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু বাঙালিকে অর্থনৈতিক মুক্তি প্রদানের জন্য কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু তিনি এ কাজ সমাপ্ত করার আগেই ঘাতকদের হাতে নির্মমভাবে সপরিবারে শহীদ হন। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করে একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে সবাইকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
সবশেষে বঙ্গবন্ধু ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নিহত সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এবং করোনাভাইরাসের রাহু গ্রাস থেকে সব প্রবাসী বাংলাদেশিসহ বিশ্ববাসীর মুক্তির জন্য পরম দয়ালু সৃষ্টিকর্তার কাছে মোনাজাত করা হয়।