সৌদি আরবের সঙ্গে কৃষি ও মৎস্য খাতে যৌথ সহযোগিতার প্রস্তাব রাষ্ট্রদূতের

Looks like you've blocked notifications!
সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী দেশটির পরিবেশ, পানি ও কৃষি বিষয়ক মন্ত্রী আবদুল রহমান আল ফাদলির সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেছেন। ছবি : এনটিভি

বাংলাদেশের কৃষি ও মৎস্য খাতে অর্জিত সাফল্য ও অভিজ্ঞতা সৌদি আরবের সঙ্গে বিনিময় এবং এ দুটি খাতে একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।

রাষ্ট্রদূত সৌদি আরবের পরিবেশ, পানি ও কৃষি বিষয়ক মন্ত্রী আবদুল রহমান আল ফাদলির সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহ ব্যক্ত করেন। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ও পরিবেশ সুরক্ষায় বনায়ন কার্যক্রমে বাংলাদেশের দক্ষ ও অভিজ্ঞ শ্রমিকরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে রাষ্ট্রদূত জানান।

জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশ চাল ও সবজি উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। কৃষি ও মৎস্য খাতে বাংলাদেশের সফলতার পেছনে রয়েছে সঠিক পরিকল্পনা, গবেষণা ও দক্ষ জনশক্তি যা বাংলাদেশকে আজ খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সহায়তা করেছে।

রাষ্ট্রদূত আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের অনেক শ্রমিক সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে কৃষি ও মৎস্য খামারে কাজ করে সফলতা পেয়েছে। এজন্য কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ সৌদি আরবের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেন। পাশাপাশি প্রয়োজন সাপেক্ষে বাংলাদেশ দক্ষ কৃষি শ্রমিক প্রেরণ করবে বলে জানান।

জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশ থেকে সবজি ও মাছ সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্য ও অন্যান্য দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। সৌদি আরবকে বাংলাদেশ থেকে সুলভমূল্যে আরও বেশি কৃষি পণ্য, মৌসুমি ফল ও মাছ আমদানির প্রস্তাব দেন তিনি।

একইসঙ্গে রাষ্ট্রদূত খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে আফ্রিকার আগ্রহী কোনো দেশে সৌদি বিনিয়োগে বাংলাদেশের দক্ষ কৃষি ও মৎস্য শ্রমিক কাজ করতে পারে মর্মে উল্লেখ করেন, যা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি সবার জন্য লাভজনক হবে বলে জানান। 

রাষ্ট্রদূত ড. জাবেদ পাটোয়ারী সৌদি আরবের কৃষি বিষয়ক মন্ত্রী আবদুল রহমান আল ফাদলি ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কৃষি বিষয়ে অর্জন ও সফলতা অবলোকনের জন্য এবং এ বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্র যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

বাংলাদেশের ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা করে দীর্ঘ মেয়াদে খাদ্য ও পানির নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে, এই ঝুঁকি মোকাবিলায় সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও বৃক্ষরোপণ বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চায়।

জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, সৌদির বৃক্ষরোপণ ও সবুজায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের শ্রমিকদের অংশগ্রহণের পাশাপাশি এ বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক ও স্বাক্ষর করা যেতে পারে যাতে সৌদি পরিবেশ উপযোগী চারা নার্সারিতে উৎপাদনসহ দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন গবেষণা ও বৃক্ষরোপণ বিষয়ে কারিগরি সহায়তা বিনিময় করা যেতে পারে।

সৌদি কৃষিমন্ত্রী কৃষি, মৎস্য ও জলবায়ু সংরক্ষণে বাংলাদেশের ভূমিকা ও সফলতার ভূয়সী প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের সঙ্গে কৃষি, মৎস্য ও পরিবেশ বিষয়ে সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্র নির্ধারণে দূতাবাসের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখবেন মর্মে আশা প্রকাশ করেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ দূতাবাসের ইকোনমিক কাউন্সেলর মুর্তুজা জুলকার নাঈন নোমান ও কাউন্সেলর মো. হুমায়ুন কবীর উপস্থিত ছিলেন।