মিসরে বাংলাদেশিদের স্বপ্ন পূরণ ও কিছু কথা

Looks like you've blocked notifications!

বুক ভরা আশা আর পাহাড় সমান স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমায় অনেক শ্রেণি-পেশার মানুষ। এদের মধ্যে কতজনই বা পেরেছে তাদের সে কাঙ্ক্ষিত  স্বপ্ন পূরণে সঠিক উপায়ে কাজ করে যেতে। কিংবা কতজনই পেরেছে মিসরের সনামধন্য ব্যবসায়ী মি. সুমন, মি. জাকির বা মি. স্বপন হতে। বর্তমানে মিসরে পোশাক খাত ছাড়া অন্য কোনো খাতে বাঙালি শ্রমিক খুঁজে পাওয়া  কঠিন বিষয়। এখানে হাতেগোনা কয়েকজন বাঙালি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এদের মধ্যে কেউ বৈধ আবার কেউ অবৈধ উপায়ে ব্যবসা করে টাকার পাহাড় গড়ছেন। কিছুদিন আগে জাল ভিসার একটা প্রকোপ ছিল বাঙালিদের মধ্যে, যা দূতাবাসের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়ে গেছে। 

এখনো মিসরে অবস্থিত বাঙালিরা হুন্ডি ব্যবসায় জড়িত, যা বাংলাদেশ সরকারের রেমিটেন্স খাতে গুরুত্বপূর্ণ কুপ্রভাব ফেলছে। যদিও মিসরে বাংলাদেশি কোনো ব্যাংকের শাখা না থাকার কারণে এটাকে সঠিক হিসেবে মনে করছে অনেকে। ইতিমধ্যে কয়েকটি জায়গা যেমন : কায়রো শহরের  বিভিন্ন জায়গা, মাদিনাতুস সালাম, বিশেষ করে আওয়াল গামালসহ বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়ে ২০০-এর অধিক শ্রমিককে গ্রেপ্তার করে তাদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এজন্য মিসরীয় পুলিশ গ্রেপ্তার অভিযান অব্যহত রেখেছে। যেসব শ্রমিকদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে তারা খুব আতংকের  মধ্যে দিনযাপন করছে।

মিসর সরকারের একটি নতুন নিয়ম হয়েছে যদি কোনো শ্রমিক অবৈধভাবে বেশকয়েক বছর কাটিয়ে দেয় তাহলে তাকে, সে যে কয়েকবছর অতিবাহিত করেছে  অবৈধ ভাবে এজন্য তাকে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা জরিমানা দিয়ে মিসর থেকে বিদায় নিতে হবে। যদি কেউ জরিমনার টাকা দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে তাকে একটি নির্দিষ্টসময় পর্যন্ত জেল খাটতে হবে। কাজের অনুমতি নিয়ে আসা মিসরে খুব একটি সহজ কাজ নয় বর্তমানে। তারপরও মানব পাচারকারীরা ওত পেতে বসে আছে। মিসরে এখন কাজের অনুমতি নিতে হলে জি টু জি আলোচনা ছাড়া সম্ভব নয়।  মিসরে বাঙালিদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড যেমন : সোনা চোরাচালান, অবৈধভাবে ওষুধ পাচার, হুন্ডি, মেয়েদের নিয়ে অনৈতিক কাজ, কিডন্যাপ সহ এ ধরনের কিছু কর্মকাণ্ডে জড়িত মিসরে পরিশ্রম করতে আসা বাঙালিরা। আর এসব বেআইনি কাজে ধরা পড়ে বেশির ভাগ বাঙালি। কিছুদিন আগে নাহাদা এলাকায় চারজন বাঙালিসহ তিনজন মিসরীয় নারীকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলে স্থানীয় বাসিন্দারা। ধরে বেধড়ক মারপিট করার পর দুজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় আর বাকি দুজনকে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয় মিসরীয়রা। বাঙালিদের এই ধরনের কর্মকাণ্ডে দেশের যেমন ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় ঠিক তেমনি দূতাবাসও হিমসিম খায় বিষয়গুলো সামাল দিতে। বর্তমানে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে গেলে বাংলাদেশ দূতাবাসে নিয়োগপ্রাপ্ত নতুন কাউন্সিলর (রাজনৈতিক)  এ টি এম আ. রউফ মণ্ডল বলেন, এসব বিষয় বেশিরভাগ হ্যান্ডেল করে অত্র  দূতাবাসের প্রথম সচিব মিসেস জোবায়দা মান্নান, তারপরও কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বছরের শেষে এসে পুলিশের  গ্রেপ্তার অভিজান অব্যাহত থাকে বলে জানিয়েছে অনেকেই।