বাংলার গান গাই, বাংলায় নাচি, বাংলায় মাতি

Looks like you've blocked notifications!

‘বাংলার গান গাই, বাংলায় নাচি, বাংলায় মাতি, সারা দিন সারা বেলা, বাংলা লোকমেলা’—এই  স্লোগান নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলা লোকমেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গত ১৩ সেপ্টেম্বর, রোববার সিডনির গ্লেনফিল্ড সিডন পার্কের রেলওয়ে প্যারেডে অনুষ্ঠিত মেলায় সিডনি ছাড়াও ক্যানবেরা ও মেলবোর্ন থেকেও অনেক বাঙালি যোগ দেন। বসন্তের মৃদুমন্দ বাতাস আর রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে মেলা প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে বাঙালিদের মিলনমেলা।

‘বাংলা লোকমেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ২০১৫’-এর আয়োজক ‘বাংলাদেশি আস্ট্রেলিয়ান ওয়েলফেয়ার সোসাইটি'। চার বছর ধরে সংগঠনটি এই মেলার আয়োজন করে আসছে।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে মেলার শুরু করেন বাংলাদেশি আস্ট্রেলিয়ান ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি মতিউর রহমান খান, আহ্বায়ক ইসমাইল মিয়া। মেলায় অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ফেডারেল মেম্বার ফর অয়ারিওরা লরি ফারগুসন ও স্টেট পার্লামেন্ট মেম্বার ফর মাকুরিফিল্ড আয়নুল্যাক চানথিভং।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় অস্ট্রেলিয়ার এমপি লরি ফারগুসন বলেন, বাংলাদেশি অস্ট্রেলিয়ান ওয়েলফেয়ার সোসাইটির কর্মকর্তারা অক্লান্ত শ্রম ও মেধা দিয়ে প্রবাসের যান্ত্রিক জীবনের বাইরে এসেও বাঙালি জাতির ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতির চর্চাকে সমুন্নত রেখেছেন। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

মেলা কমিটির অহ্বায়ক ইসমাইল মিয়া বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে বাঙালি জাতির ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি চর্চা ও ইতিহাসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়াই এই মেলার প্রধান উদ্দেশ্য।

বিকেল সাড়ে ৪টায় মেয়েদের চেয়ার সিটিং ও ছেলেদের মোরগ লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে শুরু হ্য় সাংস্কৃতিক পর্বের। এরপর ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল ও কিশলয় কচিকাঁচার শিক্ষার্থীরা দেশাত্মবোধক গান ও নাচ পরিবেশন এবং কবিতা আবৃতি করে।

মাগরিবের নামাজের বিরতির পর ইনস্ট্রুমেন্টাল ফিউশনে সরদ ও তবলার সমন্বয়ে কবিতা আবৃতি, পুথিপাঠ ও ফোক গান নিয়ে ছিল একটি ভিন্নধর্মী লোকজ পরিবেশনা। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন চার্লস স্টুয়ার্ড ইউনিভার্সিটির লেকচারার ও গবেষক শিবলি আবদুল্লাহ।
সিডনির বাংলা লোকজ ও সংস্কৃতি মেলার স্টলগুলোতে সালোয়ার কামিজ, জামদানি ও অন্যান্য তাঁতের শাড়ির বিপুল সমাহার ছিল। এ ছাড়া ছিল বাঙালি ঐহিত্যবাহী খাবারের কয়েকটি স্টল। প্রায় প্রতিটি স্টলেই ছিল বাঙালি দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়। নাগরদোলাসহ ১০টি রাইড রাখা হয়েছিল মেলায়। এসব রাইড শিশুদের সারাবেলা মাতিয়ে রাখে। মেলা শেষ হয় রাত ১০টায়।

মেলায় দর্শকদের প্রবেশ ছিল উন্মুক্ত। এ ছাড়া ছিল কার পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। সিডনি ছাড়াও ক্যানবেরা, মেলবোর্নসহ অস্ট্রেলিয়ার দূর দূরান্ত থেকে অনেক বাঙালি মেলায় যোগ দেন।