৩৫ হাজার মুসল্লির জন্য প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ
ঈদুল ফিতর কবে, জানা যাবে শুক্রবার। এরই মধ্যে প্রস্তুত হয়েছে দেশের জাতীয় ঈদগাহ। নেওয়া হয়েছে নানা ব্যবস্থা। গরমে কেউ যেন কষ্ট না পান, সেজন্য পর্যাপ্ত খাবার পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। হঠাৎ ঝড়বৃষ্টির কবল থেকে মুসল্লিদের রক্ষায় পুরো ঈদগাহের ওপর ত্রিপল দিয়ে ঢাকা হয়েছে। আছে পর্যাপ্ত পাখা ও চিকিৎসা সহযোগিতার ব্যবস্থা, ওজুখানাসহ মহিলাদের জন্য আলাদা পথ। রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থাও।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস জানিয়েছেন এসব তথ্য। আজ বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) ঈদগাহ পরিদর্শন শেষে তিনি এসব তথ্য জানান।
মেয়র তাপস বলেন, ‘আমরা আশা করছি, মহামান্য রাষ্ট্রপতি আমাদের সঙ্গে ঈদের জামাতে অংশ নেবেন। পাশাপাশি মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, সচিব, কূটনৈতিকবৃন্দসহ ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করবেন। ঢাকাবাসী ও সাধারণ মুসল্লিদের জন্য সুষ্ঠু আয়োজন করা হয়েছে। ওজুখানাসহ মহিলাদের জন্য আলাদা পথ রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত খাবার পানির ব্যবস্থা রেখেছি, যাতে করে এই ভ্যাপসা গরমে কেউ যেন কষ্ট না পান। সবদিক বিবেচনা করে হঠাৎ করে ঝড়বৃষ্টি হলে যাতে পানি জমতে না পারে বা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত না হতে পারে, তাই পুরোটাই আমরা ত্রিপল দিয়েছি এবং পর্যাপ্ত পাখা ও চিকিৎসা সহযোগিতার ব্যবস্থাও রেখেছি।’
মেয়র বলেন, ‘গতবারের তুলনায় এবার স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্র বেশি রাখা হয়েছে, চিকিৎসক বেশি রাখা হয়েছে। কারণ, যে তীব্র তাবদাহ চলছে তাতে কেউ অসুস্থ হলে যেন সেবা দেওয়া সেজন্য সিভিল সার্জন অফিসসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আলাদা স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের ব্যবস্থা করেছে।’
তাপস বলেন, ‘যেহেতু মহামান্য রাষ্ট্রপতি আসবেন, তাই এসএসএফসহ আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন। আমরা আশাবাদী, একটি সুন্দর- সুষ্ঠু পরিবেশে ব্যাপক মুসল্লির অংশ্রগহণে আমরা ঈদের মূল জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সুতরাং, আমরা পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছি। জাতীয় ঈদগাহে সবাইকে সাদরে অভ্যর্থনা জানাতে আমরা অপেক্ষায় আছি।’
২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাতে শরিক হতে পারবেন। এ ছাড়া প্যান্ডেলের বাইরে চারপাশের রাস্তাগুলোতেও আরও অর্ধ-লক্ষাধিক ব্যক্তিবর্গ ঈদ জামাতে অংশগ্রহণ করে থাকেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঈদগাহ মাঠে ১০টি এয়ার কুলারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত ফ্যান ও লাইটের ব্যবস্থা আছে। সেখানে সিলিং ফ্যান ৫৫০টি, স্ট্যান্ড ফ্যান ১৫০টি, মেটাল লাইট ৪০টি ও টিউব লাইট ৭০০টি রাখা হয়েছে। পাশাপাশি খাবার পানির ব্যবস্থা, ভিআইপি কাতারে জায়নামাজের ব্যবস্থা, ভ্রাম্যমাণ টয়লেটের ব্যবস্থা, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা এবং বৃষ্টির পানি নিরোধক সামিয়ানার ব্যবস্থা করা হয়েছে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে।
জাতীয় ঈদগাহ মাঠে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের সঙ্গে করে দিয়াশলাই বা লাইটার জাতীয় কোনো বস্তু না আনার আহ্বান জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে এবং তীব্র দাবদাহ রয়েছে। সুতরাং, সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন-সতর্ক থাকার আহ্বান করছি। দয়া করে কেউ কোনো দিয়াশলাই অথবা লাইটার জাতীয় কোনো বস্তু আনবেন না। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এ ব্যাপারে সজাগ থাকবে। সতর্ক থাকবে। তাই সকলকে বিনয়ের সঙ্গে আহ্বান করছি—আপনারা কেউ এ ধরনের বস্তু আনবেন না।’
জাতীয় ঈদগাহে সবাইকে নামাজ আদায়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘মহিলাদের নামাজের জন্য এখানে যেমন আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে, তেমনি বের হওয়ার জন্যও আলাদা গেটেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। নামাজ শেষে মুসল্লিরা বের হওয়ার সময় যেন কোনো হুড়াহুড়ি না হয়, সে কারণে বের হওয়ার জন্য আমরা পর্যাপ্ত পথ রেখেছি। ঝড়-বৃষ্টি হলে ভিতরে যেন পানি ঢুকতে না পারে তার জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সুতরাং আমরা সবাই মিলে খুব সুন্দর একটা পরিবেশে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করব। ঢাকাবাসীসহ সবাইকে আহ্বন করব—আপনারা আসবেন। জামাতে অংশগ্রহণ করবেন। আমরা একই সঙ্গে সকলে মিলে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করব।’