দয়ার বড়দিন
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/12/25/photo-1450982841.jpg)
২৫ ডিসেম্বর। শুভ বড়দিন। যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন। আমাদের সকলের জন্মদিন। ঈশ্বরপুত্রের জন্মদিন। যিশুর মধ্য দিয়ে আমরা সকলে ঈশ্বরপুত্র হয়েছি। সকল জন্মদিনের শ্রেষ্ঠ জন্মদিন।
এ বছর যদিও বড়দিন উদযাপনকে ঘিরে নানা দুশ্চিন্তা, আতঙ্ক ও দুর্ভাবনা আমাদের মধ্যে রয়েছে এবং চারদিকে অস্থিরতা বিরাজ করছে; কিন্তু তার পরও সকলে মহা ধুমধামে, আনন্দমুখর পরিবেশে ও বর্ণিল আয়োজনে বড়দিন উদযাপন করছে।
বেথলেহেমের গোয়ালঘরে একটি শিশু আজ আমাদের জন্য জন্ম নিয়েছে। এ এক মহা আনন্দের সংবাদ।
প্রতিবছরই বড়দিনের একটি বিশেষ বার্তা থাকে। এ বছরের বার্তাটা হলো ঈশ্বরের মতো দয়ালু হওয়া। ‘তোমাদের পিতা যেমন দয়ালু, তোমরাও তেমনি দয়ালু হও”। তাই মনোযোগের সঙ্গে আমাদের দয়ার কাজে জড়িত করতে হবে। যিশু তাঁর কথা ও কাজে ঈশ্বরের প্রতি দয়া প্রকাশ করেছেন। বড়দিন উদযাপনে দয়াটাই প্রধান। আমাদের স্বর্গসুখ লাভ নির্ভর করে দয়ার ওপর। ন্যায্যতা ও দয়া ছাড়া আমরা পরিত্রাণ আশা করতে পারি না। এই বড়দিনে আমাদের রুটি গরিবদের সঙ্গে ভাগ করে খেতে হবে, আশ্রয়হীনদের আমাদের বাড়িতে এনে আশ্রয় দিতে হবে, বস্ত্রহীনদের বস্ত্র দিতে হবে। ভাইবোনদের দয়া দেখাতে না পারলে ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক থাকে না।
যিশু তাঁর জীবনে নিরুপায় মানুষের অন্তরে শক্তি জুগিয়েছেন, ক্ষুধার্ত মানুষকে খাদ্যদানে পরিতৃপ্ত করেছেন, বিধবার একমাত্র ছেলেটিকে জীবন ফিরিয়ে দিয়ে হাসি ফিরিয়ে এনেছেন, মন্দ আত্মা পাওয়া লোকটিকে রোগমুক্ত করেছেন। এই হলো যিশুর দয়া।
যিশু এই পৃথিবীতে কেন এলেন? কেন বড়দিন? ঈশ্বর জগৎ ও জগতের মানুষকে এত ভালোবাসলেন যে আর স্বর্গে থাকতে পারলেন না। তাই এসো, আমরা তাঁকে আমাদের মাঝে প্রাণঢালা স্বাগতম জানাই। ঈশ্বর এখন আমাদের সঙ্গেই আছেন। তিনি ইম্যানুয়েল। তাঁর মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের ভালোবাসা ও দয়া আমাদের মাঝে প্রকাশিত হলো। তাঁর আগমনের কারণেই আমাদের মুক্তি কাজ সম্ভব হলো। তিনি এসে আমাদের শিক্ষা দিলেন, কীভাবে জীবনযাপন করতে হবে এবং কী করতে হবে। তাই আমাদের ভালো করতে হবে, যা কিছু আমাদের ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে নিয়ে যায়, সেসব থেকে দূরে থাকতে হবে।
তিনি এলেন যেন আমরা পরিপূর্ণভাবে জীবন পেতে পারি। তিনি এলেন সেবা পেতে নয়, বরং সেবা দিতে এবং বহু মানুষের মুক্তির জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দিতে। ঈশ্বর মানুষ হলেন যেন মানুষ ঈশ্বর হতে পারে।
যিশুর জন্ম-জগতের সব অন্ধকার দূর করেছে এবং মানব-মনের সব সন্দেহ দূরীভূত করেছে। বড়দিনে আমরা সবাই মিলে প্রার্থনা করি যেন জগতে শান্তি বিরাজিত হয়।
লেখক : তেজগাঁও জপমালা গির্জার প্রধান পুরোহিত