আপনার জিজ্ঞাসা
মহানবী (সা.) কি নূরের তৈরি?

নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ১৮৭১তম পর্বে চিঠিতে মহানবী (সা.) নূরের তৈরি কি না, সে সম্পর্কে ঢাকার মহাখালী থেকে জানতে চেয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দর্শক। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : মহানবী (সা.) কি নূরের তৈরি?
উত্তর : মহানবী (সা.) এবং অন্য নবী ও রাসূলরা নূরের তৈরি নন। সব নবী ও রাসূল আদম সন্তান। আদমকে (আ.) যা থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে, ঠিক সব নবী ও রাসূল তা থেকে সৃষ্ট। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোরআনের মধ্যে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, ‘আদমকে (আ.) সৃষ্টি করে দিয়েছেন মাটি থেকে।’
তাই আদমের (আ.) সন্তান যাঁরা কেয়ামত পর্যন্ত আসবে, এঁরা সবাই কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই মাটি থেকে সৃষ্ট। পরবর্তী সময়ে আল্লাহ সুবানাহুতায়ালা মাটির এই প্রক্রিয়াকে পরিবর্তন করেছেন। পরবর্তী সময়ে মাটিতে সেটিকে রাখা হয়নি।
সরাসরি আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন আদম (আ.)-কে। এর পর আদমের ওরসে বাকি যাঁরা জন্মগ্রহণ করেছেন, এঁরা সবাই সৃষ্টি হয়েছেন। কিন্তু এরা মূলত বীর্য থেকে সৃষ্টি হয়েছেন। প্রথম সৃষ্টিটি মাটির অন্য রকম এবং এর একটি অংশ রয়ে গেছে। সেটা হচ্ছে, এই বীর্যের মধ্যেই মূলত মাটির একটা অংশ রয়েছে, যেহেতু এটাকে মাটি থেকে সৃষ্ট করা হয়েছে।
এটি সব নবী ও রাসূলের বৈশিষ্ট্য। এঁরা মানুষ। যদি তাঁরা জিন হতেন, তাহলে মানুষ তাঁদের দেখতে পেত না, মানুষ তাঁদের আনুগত্য করতে পারত না। যদি তাঁরা ফেরেশতা হতেন, তাহলে মানুষ ভয়ে পালিয়ে যেত। কারণ, মানুষ তাঁদের স্বাভাবিক অবস্থায় পেত না। মানুষের কাছে তাঁরা দাওয়াত পৌঁছাতে পারত না। এ জন্য আল্লাহ সুবানাহুতায়ালা ফেরেশতাদের থেকেও নবী ও রাসূলদের প্রেরণ করেননি। আবার জিনদের কাছ থেকেও প্রেরণ করেননি; বরং আল্লাহতায়ালা মানুষের কাছ থেকেই নবী ও রাসূলদের প্রেরণ করেছেন। কারণ কোরআনের মধ্যে বলেছেন, ‘যাতে করে মানুষের কাছে মানুষের বক্তব্যগুলো, আল্লাহর কথাগুলো স্পষ্ট করে তুলে ধরতে পারে।’
কারণ মানুষ মানুষের কাছে যে বক্তব্য দিতে পারবে, সেটা জিন অথবা অন্য কেউ সে বক্তব্য দিতে পারবে না।