লেনদেনের শীর্ষে থেকেও ফু-ওয়াং সিরামিকের দর কমেছে ১৭ শতাংশ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘বি’ ক্যাটাগরির ফু-ওয়াং সিরামিক গত সপ্তাহে (রোববার থেকে বৃহস্পতিবার) ১৫৯ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা মোট লেনদেনের পাঁচ দশমিক ৭১ শতাংশ একাই করেছে কোম্পানিটি। এতে সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে। অপরদিক গেল সপ্তাহে কোম্পানির দর কমেছে ১৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এতে কোম্পানিটি দর কমার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে চলে এসেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ডিএসইতে গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ফু-ওয়াং সিরামিকের শেয়ারের সমাপনী দর দাঁড়ায় ২৫ টাকা ৪০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহে বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ৩০ টাকা ৬০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি দর কমেছে পাঁচ টাকা ২০ পয়সা বা ১৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির ১৫৯ কোটি ৫২ লাখ ১০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের পাঁচ দশমিক ৭১ শতাংশ। এ সময় পাঁচ কোটি ৫৫ লাখ চার হাজার ৭৬২টি শেয়ারের কেনাবেচা হয়। সপ্তাহটিতে মোট ৪১১টি কোম্পানি দুই হাজার ৭৯৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে।
তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২০২৪) দ্বিতীয় প্রান্তিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদনে ফু-ওয়াং সিরামিকের শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয় পাঁচ পয়সা। আগের অর্থবছরের (২০২২-২০২৩) একই সময়ে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি মুনাফা ছিল সাত পয়সা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস বা দুই প্রান্তিকে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় ১৪ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি মুনাফা ছিল ১২ পয়সা। আলোচিত দুই প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয় ৩৩ পয়সা। আগের অর্থবছরের (২০২২-২০২৩) একই সময়ে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি নগদ প্রবাহ ছিল ২৯ পয়সা। গত ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা চার পয়সা। আগের অর্থবছরের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছিল ১১ টাকা ৯১ পয়সা।
২০২২-২০২৩ অর্থবছরের সমাপ্ত আর্থিক প্রতিবেদন (জুলাই-জুন) যাচাই বাছাই করে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ২ শতাংশ নগদ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছিল ২৬ পয়সা। আগের ২০২১-২০২২ অর্থবছরে (জুলাই-জুন) শেয়ার প্রতি মুনাফা ছিল ২৩ পয়সা। সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ার প্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছিল নেগেটিভ পাঁচ টাকা ১৫ পয়সা। আগের অর্থবছরে শেয়ার প্রতি নগদ প্রবাহ ছিল নেগেটিভ তিন টাকা ২৭ পয়সা। গত ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৯১ পয়সা। আগের অর্থবছরে শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছিল ১১ টাকা ৭৮ পয়সা।
১৯৯৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ফু-ওয়াং সিরামিক। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন পাঁচশত কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১৩৬ কোটি ২৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। শেয়ার সংখ্যা ১৩ কোটি ৬২ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩টি। রিজার্ভে রয়েছে ১৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকরা ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেছে। এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক পরিচালকরা তিন দশমিক ৬৩ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারী দশমিক ৪০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ৬৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেছে।
এদিক, গেল সপ্তায় লেনদেন তালিকায় শীর্ষ দ্বিতীয়তে এসেছে ‘বি’ ক্যাটাগরির গোল্ডেন সনের শেয়ার। কোম্পানিটি একাই ১২৫ কোটি ৩২ লাখ ৬০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে। যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। পাঁচ কোটি ৬৬ লাখ ৭৩ হাজার ৯৮৫টি শেয়ারের কেনাবেচা হয়। গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) শেয়ারটির সমাপনী দর দাঁড়ায় ২৩ টাকা ২০ পয়সা। যা আগের সপ্তাহে বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ১৯ টাকা ১০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ারটির দর বেড়েছে চার টাকা ১০ টাকা বা ২১ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
শীর্ষ তৃতীয়তে এসেছে ‘এ’ ক্যাটাগরির লাভেলো আইসিক্রিমের শেয়ার। কোম্পানিটি একাই ১১২ কোটি ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে। যা মোট লেনদেনের চার দশমিক শূন্য এক শতাংশ। দুই কোটি ৯ লাখ ৬৯ হাজার ৮৯৭টি শেয়ারের কেনাবেচা হয়। গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) শেয়ারটির সমাপনী দর দাঁড়ায় ৫৩ টাকা ৭০ পয়সা। যা আগের সপ্তাহে বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ৪৬ টাকা ৯০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ারটির দর বেড়েছে ছয় টাকা ৮০ টাকা বা ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।
শীর্ষ চতুর্থতে এসেছে ‘এ’ ক্যাটাগরির ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটি একাই ১১০ কোটি ৩৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে। যা মোট লেনদেনের তিন দশমিক ৯৫ শতাংশ। ১৮ লাখ ২৩ হাজার ২৭৩টি শেয়ারের কেনাবেচা হয়। গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) শেয়ারটির সমাপনী দর দাঁড়ায় ৫৮৯ টাকা ৭০ পয়সা। যা আগের সপ্তাহে বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ৬৫০ টাকা ১০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ারটির দর কমেছে ৬০ টাকা ৪০ টাকা বা ৯ দশমিক ২৯ শতাংশ।
এ ছাড়া শীর্ষ পঞ্চমে এসেছে ‘এ’ ক্যাটাগরির এসএস স্টিলের শেয়ার। কোম্পানিটি একাই ৮০ কোটি পাঁচ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে। যা মোট লেনদেনের দুই দশমিক ৮৭ শতাংশ। পাঁচ কোটি সাত লাখ ৯০ হাজার ৫৩৫টি শেয়ারের কেনাবেচা হয়। গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) শেয়ারটির সমাপনী দর দাঁড়ায় ১৬ টাকা ২০ পয়সা। যা আগের সপ্তাহে বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ১২ টাকা ৯০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ারটির দর বেড়েছে তিন টাকা তিন পয়সা বা ২৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
তালিকায় অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সেন্ট্রাল ফার্মার (‘বি’ ক্যাটাগরি) ৭১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের (‘এ’ ক্যাটাগরি) ৬৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, বেস্ট হোল্ডিংসের (‘এন’ ক্যাটাগরি) ৫৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, আফতাব অটোমোবাইলসের (‘এ’ ক্যাটাগরি) ৫১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা এবং ফরচুন সুজের (‘বি’ ক্যাটাগরি) ৫১ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।