লেনদেনের শীর্ষে স্কয়ার ফার্মা, দর বেড়েছে ১০ টাকা
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের (স্কয়ার ফার্মা) ৮৭ কোটি ৯৭ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে গত সপ্তায় (রোববার থেকে বৃহস্পতিবার)। যা মোট লেনদেনের পাঁচ দশমিক ৯০ শতাংশ একাই করেছে কোম্পানিটি। এতে সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে। অপরদিক সপ্তাহটিতে শেয়ারপ্রতি দর বেড়েছে ১০ টাকা ৪০ পয়সা। যা কোম্পানিটির মোট শেয়ারের মাধ্যমে বাজারে মূলধন বেড়েছে ৯২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, ডিএসইতে গত বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারের সমাপনী দর দাঁড়ায় ২২২ টাকা ৮০ পয়সা। আগের সপ্তাহের ১২ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ২১২ টাকা ৪০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি দর বেড়েছে ১০ টাকা ৪০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোট শেয়ারের মাধ্যমে ডিএসইর বাজারে মূলধন বেড়েছে ৯২১ কোটি ৯০ লাখ ৯০ হাজার ৫০৪ টাকা। গেল সপ্তাহটিতে ৩৯৭টি কোম্পানির এক হাজার ৪৯২ কোটি ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সেখানে সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির ৮৭ কোটি ৯৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা মোট লেনদেনের পাঁচ দশমিক ৯০ শতাংশ। গত বৃহস্পতিবার অডিটেড সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত দাঁড়ায় আট দশমিক ১১ পয়েন্টে। পিই রেশিও হিসেবে কোম্পানিটিতে বিনিয়োগ নিরাপদে রয়েছে।
উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারের কোনো কোম্পানির পিই রেশিও যদি সিঙ্গেল ডিজিটে থাকে, তাহলে সেখানে বিনিয়োগ সম্পূর্ণ নিরাপদ ধরে নেওয়া হয়। এছাড়া পিই রেশিও ডিজিট যদি ১৫ পয়েন্ট পর্যন্ত অবস্থান করে, তবে সেখানেও বিনিয়োগ নিরাপদ বলে ধরা হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসাবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই রেশিও বেঁধে দিয়েছে। সেই হিসেবে, ৪০ পর্যন্ত পিইধারীর শেয়ার বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে জানায় বিএসইসি। মানে পিই রেশিও ৪০ এর ওপরে গেলে বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। পিই রেশিও যতো বাড়বে ঝুঁকির মাত্রা ততো বাড়তে থাকবে।
কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২০২৫) প্রথম প্রান্তিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ছয় টাকা ৮৭ পয়সা। আলোচিত প্রথম প্রান্তিকে সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছে তিন টাকা ৮৯ পয়সা। গত ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৪৯ টাকা ৭৬ পয়সা।
এর আগের ২০২৩-২০২৪ সমাপ্ত অর্থবছরে (জুলাই-জুন) জন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ১১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এ জন্য কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ১৮ ডিসেম্বর। কোম্পানিটির রেকর্ড ডেট ছিল গত ২১ নভেম্বর। ওই অর্থবছরে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছিল ২৩ টাকা ৬১ পয়সা। সমাপ্ত অর্থবছরে সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছিল ২০ টাকা ৯০ পয়সা। সমন্বিত শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছিল ১৪২ টাকা পাঁচ পয়সা।
১৯৯৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। ‘এ’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন এক হাজার কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৮৮৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। শেয়ার সংখ্যা ৮৮ কোটি ৬৪ লাখ ৫১ হাজার ১০টি। রিজার্ভে রয়েছে ১০ হাজার ৪২৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৪২ দশমিক ৯১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ, বিদেশিদের ১৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ২৮ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ২০২৩ সালের ৩০ জুনে কোম্পানিটির দীর্ঘমেয়াদি ঋণ রয়েছে ১৩৬ কোটি ৮৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং স্বল্পমেয়াদি ঋণ ৬১ লাখ ৮৬ লাখ ১০ হাজার টাকা।