নওগাঁয় হিজাবকাণ্ডে প্রধান শিক্ষক জেলহাজতে
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় ‘হিজাব বিতর্ক’ নিয়ে আলোচিত দাউল বারবাকপুর স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা আমোদিনী পালের করা মামলায় জেলহাজতে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরনী কান্ত বর্মণ। আজ রোববার দুপুরে ধরনী কান্ত আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেন।
মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও মানহানির অভিযোগে দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল গত বৃহস্পতিবার মহাদেপুর থানায় মামলা করেন। বেআইনিভাবে দলবদ্ধ হয়ে হামলার অভিযোগে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। ওই মামলার এজহারভুক্ত আসামি কিউ এম সাঈদ ও কাজী সামসুজ্জামান মিলনকে সেদিনই গ্রেপ্তার করে মহাদেবপুর থানা পুলিশ।
ওই মামলায় প্রধান বিবাদী ধরনী কান্ত বর্মণ আজ রোববার দুপুরে নওগাঁর সিনিয়র জুডিশিয়াল আমলি আদালত-৩-এ হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। পরে বিচারক তাজুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক ধরনী কান্ত বর্মণের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে হিজাব নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে এবং তাঁকে সামাজিকভাবে হেয় করা হয়েছে।
এর আগে দাউল বারবাকপুর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পেটানোর অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ে হামলার ঘটনার তিন দিন পর গত ১০ এপ্রিল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরনী কান্ত বর্মণ। জিডিতে ওই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অজ্ঞাত পরিচয় ১৪০ থেকে ১৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।
উল্লেখ্য, উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চবিদ্যালয়ের কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থী ফেসবুকে ‘হিজাব পরায়’ পিটুনির অভিযোগ এনে ফেসবুকে ভিডিও প্রকাশ করে। এরপর আরও কিছু ভিডিও আসে। পাশাপাশি বেশ কিছু অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
মেয়েদের অভিযোগের পর তোলপাড়ের মধ্যেই ৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার স্কুলটিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর আসলে কী ঘটেছিল, তা বের করতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। দায়িত্ব দেওয়া হয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেককে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিকে। গত সোমবার রাত ৮টার দিকে তদন্ত কমিটি মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমানের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘স্কুল ড্রেস না পরার কারণে স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দুই শিক্ষক বেত্রাঘাত করেন। তাদের মধ্যে হিন্দু ছাত্রী ও ছেলে শিক্ষার্থীও ছিল। হিজাব পরার কারণে শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়েছে, এমন তথ্য তদন্ত প্রতিবেদনে পাওয়া যায়নি।