আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে কোনো অপরাধীকে ছাড় নয় : আইজিপি

Looks like you've blocked notifications!
কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। ছবি : এনটিভি

বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, ‘অপরাধী যেই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোনো অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। কেউ আইন ভঙ্গ করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

আজ বুধবার (৩ মে) বিকেলে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি এ কথা বলেন। আইজিপি গতকাল মঙ্গলবার (২ মে) বিকেলে বিমানযোগে কক্সবাজার আসেন। আজ সকালে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে কক্সবাজার শহরে ফিরে তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, ‘কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে সেখানকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাম্প্রতিককালে আইনশৃঙ্খলজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে গত মাসে ক্যাম্পের পরিস্থিতি কিছুটা ভালো ছিল। ক্যাম্পের পরিস্থিতি ভালো করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কর্মকৌশল নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের খুন-খারাবি ও মাদক কারবার বন্ধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।’

“মিয়ানমারে নিষিদ্ধ ঘোষিত ‘আরসা’মুক্ত রোহিঙ্গা শিবির কীভাবে করা যায় এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি যেমনি অব্যাহত রয়েছে, তেমনি তাদের (আরসা) বিরুদ্ধেও অব্যাহত থাকবে।

এ সময় সম্প্রতি ট্রলারে ১০ মরদেহ উদ্ধারের ব্যাপারে আইজিপি বলেন, ‘যেকোনো ভাবে হোক না কেন, ১০টা প্রাণহানি হয়েছে। এই ঘটনা শোনার পর পরই আমরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছি। এখানে সিআইডি টিম, পিবিআই টিম পাঠানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে কাজ করছে র‍্যাবও। তারা এখানে এসে খোঁজখবর নিয়ে ঘটনার মূল কারণ বের করার চেষ্টা করেছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। কেউ কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। এ নিয়ে আমরা আরও কাজ করে যাচ্ছি। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের তথ্য সংগ্রহ করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।’

পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আরও বলেন, ‘অপহরণ কিংবা যেকোনো ধরনের অপরাধ সংঘটিত হলে আমাদের জাতীয় পরিষেবা ৯৯৯-এ যোগাযোগ করে সহায়তা চাওয়ার জন্য এলাকার সবাইকে অনুরোধ করব। এই পরিষেবায় আমাদের টিম দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আপনারা দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের তথ্য দিলে যে কেউ পুলিশের সহায়তা পাবে।’

জলদস্যুদের ব্যাপারে আইজিপি বলেন, ‘আত্মসর্মপণ করা জলদস্যুদের ব্যাপারে প্রতিনিয়ত খবর রাখছে পুলিশ। তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আবারও কোনো অপরাধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে খবর রাখছে। তারা ভালো হতে চেয়েছে বলে আমরা তাদের সুযোগ দিয়েছি। কিন্তু আত্মসমর্পণের কথা বলে তারা পুনরায় অপরাধ সংঘটিত করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আজ সকাল সাড়ে ১০টায় আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন কক্সবাজার থেকে উখিয়ার কুতুপালং ১৯ নম্বর ক্যাম্পে গিয়ে পৌঁছান। ক্যাম্পে পৌঁছার পর তিনি ওই ক্যাম্পের ৮ এপিবিএন কার্যালয়ে যান। সেখানে কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে মতবিনিময় করেন। ওই সময় তিনি আন্তর্জাতিক সংস্থা ও শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন এবং গাছের চারা রোপণ করেন। বিকেলে তিনি কক্সবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক একটি সভায় যোগ দেন।