আগামী জাতীয় নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে : ড. খন্দকার মোশাররফ

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীতে বিএনপির গণসমাবেশে আজ শনিবার বিকেলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ছবি : সংগৃহীত

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের  অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে দশ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপির এ বর্ষীয়ান নেতা বলেন, দেশ রক্ষায় সরকারের পতন অনিবার্য। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত আগামী জাতীয় নির্বাচনে জনতার সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, সরকারের পদত্যাগে বাধ্য করতে ২৪ ডিসেম্বর গণমিছিলের মধ্য দিয়ে যুগপতভাবে আন্দোলনের সূচনা হবে। এ আন্দোলনে দেশবাসীকে অংশ নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি। এছাড়াও নিহত নেতাকর্মীদের হত্যার বিচার ও গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে ১৩ ডিসেম্বর ঢাকাসহ জেলা সদরে গণবিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও জানান ড. মোশাররফ।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, গণতন্ত্র হত্যাকারী, দেশের সম্পদ লুণ্ঠনকারী ও কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন অত্যাসন্ন। দেশ রক্ষায় সরকারের পতন অনিবার্য। ইতোমধ্যেই অবৈধ সরকারের ভেতরে পতন আতঙ্ক শুরু হয়েছে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত আগামী জাতীয় নির্বাচনে জনতার সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

আজ শনিবার সকাল সোয়া দশটায় রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে এ গণসমাবেশ শুরু হয়। সকল বাধা ও প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে লাখো জনতার সমাগম ঘটে মাঠসহ আশেপাশের এলাকায়। বেলা বাড়ার সঙ্গেসঙ্গে রাজধানীর প্রবেশপথ সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, মানিকনগর, শাহজাহানপুর, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, গোপীবাগ, টিকাটুলিসহ প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে বিএনপির নেতাকর্মীতে ভরপুর হয়ে যায়। জনতার স্রোতকে আটকে রাখতে পারেনি কোনো বাধাই।

বিএনপির এ গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ছিল ঘটনাবহুল। শর্ত ও পাল্টা শর্তের পর শেষ পর্যন্ত গতকাল শুক্রবার দুপুরে গোলাপবাগ মাঠে গণসমাবেশের অনুমতি দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। অনুমতি পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গতকাল শুক্রবার বিকেলে গোলাপবাগ মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। গণসমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

পুলিশ দিয়ে নাটক সাজিয়ে গণগ্রেপ্তার চালিয়ে অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ রক্ষা হবে না উল্লেখ করে  ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতায় আকড়ে থাকা এ সরকারকে হটাতে আগামী দিনে যুগপৎ আন্দোলন অংশ নেবে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আগামীদিনে সরকার পতনের এ আন্দোলন সফল হবে।

তিনি বলেন, বিএনপিকে সরকার ভয় পায়। এই জন্য সমাবেশ করতে দেয় না। এই সরকার যেহেতু ফ্যাসিস্ট তাই তারা গণতন্ত্র বুঝে না। যারা গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকারের কথা বলে তাদের ভয় পায়। সরকারের পেটোয়া বাহিনী দিয়ে শহরের মোড় মোড়ে আমাদের নেতাকর্মীদের সমাবেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য খন্দকার মোশাররফ বলেন, দিনের ভোট রাতে করে আপনারা ক্ষমতায় থাকতে চান। জনগণ এটা বুঝে গেছে। অর্থনীতি ধ্বংস, ব্যাংকলুট করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তারা কি এই অর্থনীতি মেরামত করতে পারবে? তারা বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। দেশের নয়টি বিভাগ থেকে তাই সারা দেশের মানুষ বার্তা দিয়েছে, এই ফ্যাসিস্ট ও লুটেরা এ সরকারকে জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

তিনি বলেন, আজকের সমাবেশ সমাবেশ যাতে সফল হতে না পারে সরকার বিএনপির মহাসচিবসহ নেতাদের গ্রেফতার করেছে। অন্যায়ভাবে পার্টি অফিসে হামলা করে কম্পিউটারের হার্ডডিস্কসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিস নিয়ে গেছে। আমরা এই বববোর্চিত হামলার নিন্দা জানাই।

তিনি বলেন, শত বাধা উপেক্ষা করে এই গণসমাবেশকে জন সমুদ্রে পরিণত করেছেন। আমি এজন্য দলের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।