আগে টাকা দিন, না হলে ভেতরে ঢুকানো হবে : হাইকোর্ট
আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস থেকে ঋণ নেওয়া খেলাপিদের উদ্দেশে আদালত বলেছেন, ‘পিপলস লিজিংয়ের টাকা জনগণের, চোর-বাটপারদের নয়। আগে টাকা দিন, পরে কথা বলুন। না হলে দায়ীদের কারাগারে নেওয়া হবে।’
পিপলস লিজিং থেকে পাঁচ লাখ টাকার বেশি ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছেন এমন ১৩৭ জন আজ বৃহস্পতিবার আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। তাদের শুনানিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে কোম্পানি বেঞ্চের বিচারক মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এসব কথা বলেন।
বিচারক আরও বলেন, ‘আপনারা টাকা তুলে নিয়ে চলে গেছেন। আর যারা পিপলস লিজিংয়ে টাকা জমা রেখেছিল, তারা না খেয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। পিপলস লিজিংয়ের টাকা জনগণের টাকা, চোর-বাটপারদের টাকা না। আগে টাকা দিন, পরে কথা বলুন। তা না হলে ভেতরে (কারাগারে) ঢুকানো হবে।’
এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত দিনে পিপলস লিজিংয়ের ঋণখেলাপির তালিকায় থাকা ১৪৩ জনের মধ্যে ৫১ জন আদালতে হাজির ছিলেন। অন্যরা কেউ কেউ আইনজীবীর মাধ্যমে সময় চেয়েছেন।
এদিন যারা হাজির হননি তাদের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেন, ‘তারা আর একবার সুযোগ পাবেন। তাতেও উপস্থিত না হলে তাদের গ্রেপ্তার করে আনা হবে।’
আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিপলস লিজিংকে ১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে মেয়াদি আমানত ও বিভিন্ন ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা ধার করে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠানটির আমানত ছিল দুই হাজার ৩৬ কোটি টাকা। আর ঋণের পরিমাণ ছিল এক হাজার ১৩১ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিই ৭৪৮ কোটি টাকা।
২০১৫ সাল থেকে ধারাবাহিক লোকসানের মধ্যে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। খেলাপিদের কাছ থেকে ঋণ আদায় করতে না পারায় আমানতকারীদের টাকাও ফেরত দিতে পারছে না তারা। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই পিপলস লিজিং অবসায়নের জন্য আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে সাময়িক অবসায়ক (প্রবেশনাল লিকুইডেটর) হিসেবে মো. আসাদুজ্জামান খানকে নিয়োগ দেওয়া হয়।