আ.লীগনেতার বাড়ি থেকে বোমা উদ্ধার, আসামি বিএনপি নেতাকর্মীরা!

Looks like you've blocked notifications!
নরসিংদী মডেল থানা। ফাইল ছবি

নরসিংদী সদরের আলোকবালী ইউনিয়নের সাবেক সদস্য এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমান হাসানকে তার নিজ বাড়ি থেকে ককটেল, হাতবোমা, গান পাউডার ও বোমা বানানোর সরঞ্জামসহ আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার নরসিংদী সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ইউসুফ আলী খান বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ইমান হাসানসহ সাতজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এর মধ্যে ছয়জনই বিএনপির নেতা। এতে বইছে সমালোচনার ঝড়। যদিও পুলিশের দাবি, যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের নামেই মামলা হয়েছে।

মামলায় আলোকবালি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমান হাসানকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব কাইয়ুম মিয়া, নরসিংদী জেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী সদস্য জাহেদুল করিম জাহিদ, জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসেন বিদ্যুৎ, হাজিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও নরসিংদী শহর যুবদলের সদস্যসচিব শামীম সরকার, সদর থানা যুবদলের আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির (রাসেল) ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ইমান হাসানের বাড়ি থেকে তিনটি বিস্ফারক দ্রব্যযুক্ত ককটেল, ৫৪টি ছোট-বড় মার্বেল, ৭৪টি পাথরের টুকরো, পাঁচটি খালি কৌটা এবং সাদা পলিথিনে মোড়ানো ৫৪০ গ্রাম গান পাউডার জব্দ করা হয়েছে। আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে অবৈধভাবে সাধারণ জনগণের ক্ষতিসাধন ও আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে বিস্ফোরক দ্রব্য রাখায় তাদের (আসামিদের) বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

মামলা প্রসঙ্গে আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী বলেন, ‘কোনো অপরাধ না করলেও কেবল হয়রানি করতে পুলিশ আমাদের নেতদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।’

শহর যুবদলের সদস্যসচিব শামীম সরকার বলেন, ‘আওয়ামী লীগনেতার বাড়ি থেকে ককটেল, বোমা ও গান পাউডার জব্দ করল পুলিশ। আর মামলা হলো আমাদের বিরুদ্ধে। এভাবেই গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।’

নরসিংদী জেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী সদস্য জাহেদুল করিম জাহিদ বলেন, ‘সরকার বিএনপিকে ভয় পাচ্ছে বলেই এমন গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে। আর কিছু কিছু পুলিশ স্পষ্টত রাষ্ট্রের পুলিশের পরিবর্তে সরকারের পুলিশে পরিণত হয়েছে।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আসাদুল্লাহ বলেন, ‘প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমান হাসানের বাড়িতে পরিত্যক্ত ককটেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম রেখে তাকে ফাঁসিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি।’

বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করা হয় নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হোসেন ভূঁইয়ার সঙ্গে। কিন্তু, তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভিজিৎ রায়  বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া ইমান হাসান যেভাবে যাদের নাম বলেছেন, ঘটনার সঙ্গে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, সেগুলোই আমরা মামলায় উল্লেখ করেছি। তারা বিএনপির নেতাকর্মী কি না, তা আমাদের জানা নেই।’

তবে, নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমিন মিয়া  সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে পুলিশ যাদের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়েছে। পুলিশ বিনা অভিযোগে কারও বিরুদ্ধে মামলা করে না। কে, কোন দল করেন, সেটা তাদের বিষয়। তারপরও আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। আর এখন পর্যন্ত এ মামলায় বিএনপির কাউকে গ্রেপ্তারের খবর আমার কাছে নেই।’