আ.লীগের হাতে গণতন্ত্র বারবার নিহত হয়েছে : মির্জা ফখরুল

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীর মতিঝিল হোটেল পূর্বাণীর হল রুমে আজ রোববার বিকেলে ‘কর্তৃত্ববাদের উত্থান ও বিপন্ন গণতন্ত্র : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। ছবি : এনটিভি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের হাতে গণতন্ত্র বারবার নিহত হয়েছে। সেটা পুনরুদ্ধার করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়া।

আজ রোববার (১৯ মার্চ) বিকেলে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। মতিঝিল হোটেল পূর্বাণীর হল রুমে ‘কর্তৃত্ববাদের উত্থান ও বিপন্ন গণতন্ত্র : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে জিয়া পরিষদ।

এসময় মির্জা ফখরুল বলেন, সংকট হচ্ছে আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থায়। আমরা একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে এ রাষ্ট্র লাভ করেছি। সেই রাষ্ট্রের অস্তিত্ব, রাজনৈতিক অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। বিপন্ন হবার কারণ হচ্ছে ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় যে কমিটমেন্ট, যে প্রতিশ্রুতি আমরা জনগণের সামনে দিয়েছিলাম; তৎকালীন যারা নেতৃত্বে ছিলেন, তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আজকের এই ৫২ বছর সমস্ত কমিটমেন্টগুলো, প্রতিশ্রুতিগুলো তারা নস্যাৎ করে দিয়ে, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা দ্বিতীয়বারের মতো ছদ্মবেশে নিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ। এদের হাতে গণতন্ত্র বারবার নিহত হয়েছে। সেটা পুনরুদ্ধার করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়া।

মির্জা ফখরুল বলেন, এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই যেটা আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেনি। দেশে কোনো আইনের শাসন নেই। পুলিশ আমাদের নেতা কর্মীদেরকে বিনাওয়ারেন্টে, বিনামামলায় তুলে নিয়ে গিয়ে একই কায়দায় নাশকতা, বিস্ফোরণ এসব মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার দেখায়। মামলায় ১০০ জনের নাম দেয় ওই এলাকায় যারা বিএনপি নেতাকর্মী। বাকি দেয় ১০০০ অজ্ঞাত নাম। পঞ্চগড়ে দিয়েছে ১৬০০০ অজ্ঞাতনামা। এতে দুটি কাজ হয়, ওই মানুষগুলো ঘরছাড়া হয়ে যায়। বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে যায়। আরেকটি হলো বিরাট বাণিজ্য শুরু হয়ে যায়। যারা ভুক্তভোগী তারাই এটা জানে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের ১০ দফায় পরিষ্কার করে বলা হয়েছে, বর্তমান সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। কারণ এ সংসদ জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সংসদ নয়। ২০১৪ ও ১৮ সালে কীভাবে নির্বাচন হয়েছে? সেটা আপনারা জানেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সকল দলের রাজনৈতিক আলোচনার প্রেক্ষিতে এটি কেয়ারটেকার গভমেন্ট তৈরি করতে হবে। তাদের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সে নির্বাচন কমিশন নতুন করে নির্বাচন ব্যবস্থা করবে। সে নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে নতুন পার্লামেন্ট হবে, নতুন সরকার গঠন করা হবে।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আজকের এই সংকট উত্তরণ শুধু বিএনপির দায়িত্ব নয়। এটা সকল রাজনৈতিক দলের, সকল মানুষের দায়িত্ব।

‘৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা এটা কি চিন্তা করা যায়? কোন সভ্য গণতান্ত্রিক দেশে একটি গণতান্ত্রিক দলের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়? এটাকে কি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যায়?’ এমন মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডাক্তার মো. আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মহাসচিব অধ্যাপক ডক্টর মো. এমতাজ হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও অধ্যাপক ড দিলারা চৌধুরী। এছাড়াও বক্তব্য দেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর আব্দুল লতিফ মাসুম, জিয়া পরিষদের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর এম সলিমুল্লাহ খান, ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট ও জিয়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।