আ.লীগ জনগণকে দেওয়া ওয়াদা পূরণ করে : প্রধানমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার পাতাল রেল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ছবি : বিটিভিতে প্রচারিত সরাসরি সম্প্রচার থেকে নেওয়া

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে জনগণকে দেওয়া ওয়াদা আমরা পূরণ করেছি। আওয়ামী লীগ জাতির সামনে যে ওয়াদা দেয় তা পালন করে। এটাই আওয়ামী লীগের ইতিহাস।

প্রধানমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি)  পাতাল রেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। ঢাকার অদূরে পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরে এ অনুষ্ঠান হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, ডা. সেলিনা হায়াত আইভি, রওশন আরা মান্নান, শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, এ কে এম সেলিম ওসমান, লিয়াকত হোসেন খোকা, সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি আমিনুল্লাহ নূরী, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) বাংলাদেশ কার্যালয়ের মুখ্য প্রতিনিধি  ইচিগুচি তমুহিদে প্রমুখ। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখনই ক্ষমতায় এসেছি, জনগণের সেবা করেছি। জনগণও আমাদের ভোট দিয়ে বারবার  ক্ষমতায় আনছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণকে দিতে এসেছি। জনগণের কাছ থেকে কিছু নিতে আসিনি। জনগণের ভাগ্য নিয়ে আমরা ছিনিমিনি খেলতে আসিনি।’ 

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার কথা উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘এ সেতুর অর্থায়ন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত হয়েছিল। আমরা জনগণের সহায়তা নিয়ে নিজেদের অর্থে এ সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজধানীর যানজট নিরসনে আমরা অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। এগুলো শেষ হলে ঢাকায় কোনো যানজট থাকবে না। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করেছি। দেশকে আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে গিয়েছি। মানুষের জীবনযাপনের মান উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে আমরা কাজ করছি।’

প্রসঙ্গত, ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি-১) প্রকল্পের আওতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়নে থাকছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক কয়েকদিন আগে সংস্থাটির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পাতাল রেল প্রকল্পের বিষয়ে বলেন, ‘সরকার ২০২৬ সালের মধ্যে আনুমানিক ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর এবং পূর্বাচল থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত মাটির নিচ দিয়ে এবং এলিভেটেড উভয় সুবিধা সম্বলিত এমআরটি লাইন-১ নির্মাণ করবে। ২০৩০ সাল নাগাদ রাজধানী ঢাকায় মোট ছয়টি মেট্রোরেল রুট উদ্বোধন করা হবে।’

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, এমআরটি লাইন-১-এর দুটি অংশ থাকবে—একটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত (বিমানবন্দর রুট)। এর দৈর্ঘ্য হবে ১৯ দশমিক ৮৭২ কিলোমিটার। এটি হবে ভূগর্ভস্থ এবং এতে ১২টি স্টেশন থাকবে। অপর অংশটি নতুন বাজার থেকে প্রায় ১১ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার এলিভেটেড লাইনসহ পূর্বাচল পর্যন্ত (পূর্বাচল রুট)। এতে সাতটি স্টেশন থাকবে। 

এ ছাড়া বিমানবন্দর রুটের অংশ হিসেবে নতুন বাজার এবং নদ্দা স্টেশন হবে ভূগর্ভস্থ। বাংলাদেশ সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন (জাইকা) এমআরটি লাইন-১-এর নির্মাণকাজের ব্যয় বহন করবে। জাইকা প্রকল্প সহায়তা (পিএ) হিসেবে দেবে ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। 

এ ছাড়া বাংলাদেশ সরকার দেবে ১৩ হাজার ১১১ কোটি ১১ লাখ টাকা। জাপানি ফার্মের নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম বিমানবন্দর-কমলাপুর-পূর্বাচল মেট্রো লাইন নির্মাণ কাজ তদারকি করবে। এই রুটে স্টেশন হবে মোট ১২টি। এগুলো হলো—বিমানবন্দর, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩, খিলক্ষেত, যমুনা ফিউচার পার্ক, নতুন বাজার, উত্তর বাড্ডা, বাড্ডা, হাতিরঝিল, রামপুরা, মালিবাগ, রাজারবাগ ও কমলাপুর।

আর পূর্বাচল রুটে নতুন বাজার স্টেশনটি হবে পাতালে। এরপর নতুন বাজার থেকে পূর্বাচলের নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জ পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার হবে উড়ালপথে। এ রুটে আবার স্টেশন হবে নয়টি।

এগুলো হলো—নতুন বাজার, যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা, পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটি, মাস্তুল, পূর্বাচল পশ্চিম, পূর্বাচল সেন্টার, পূর্বাচল পূর্ব, পূর্বাচল টার্মিনাল ও পিতলগঞ্জ ডিপো। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।