আ.লীগ পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে সন্ত্রাসকে উসকে দিচ্ছে : খন্দকার মোশাররফ
চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে আওয়ামী সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রাকে বানচাল করতে দলীয় সন্ত্রাসী ও কিছু সংখ্যক পুলিশকে লেলিয়ে দিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, বিএনপি জনগণের দাবি নিয়ে যখনই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে একই স্থানে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে সন্ত্রাসকে উসকে দিয়ে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে।
আজ রোববার সকালে (১২ ফেরুয়ারি) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ড. মোশাররফ।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গ্যাস, বিদ্যুৎ, চাল, ডাল, তেল, আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও সার-ডিজেলসহ কৃষি উপকরণের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে গতকাল ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। যদিও গত কয়েকদিন বিএনপি নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও গণগ্রেপ্তার অব্যাহত ছিল। তারপরও দেশব্যাপী প্রায় সব ইউনিয়নে গতকাল অত্যন্ত সফলভাবে কর্মসূচি পালিত হয়েছে।’
মোশাররফ বলেন, ‘দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল অসাধারণ ও অভূতপূর্ব। ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মসূচিকে সফল করায় বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেশবাসীসহ দলীয় নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘গতকাল দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির পদযাত্রায় আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলা ও গুলিবর্ষণ করেছে। নরসিংদীর পলাশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেকমন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খানের মিছিল থেকে ব্যানার ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। এ ছাড়া যশোরে ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ অমিতের ওপর ডিবি পুলিশ বর্বরোচিত হামলা চালায়। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের বেধড়ক লাঠিপেটা করে তারা।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির তৃণমূলের পদযাত্রা কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের লোকজন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধা দেওয়া ও নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘নির্মম হামলার ঘটনার চিত্র গতকাল সবাই দেখেছেন। পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রায় অর্ধশতাধিক নেতার্মী আহত হয়েছে। প্রায় শতাধিক বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠা ভাঙচুর এবং লুটপাট চালিয়েছে তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুই শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।’
ড. মোশাররফ বলেন, ‘জনগণের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ ব্যয় করে পুলিশ পাহারায় শান্তি সমাবেশের নামে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানানোর সব প্রক্রিয়া চলছে। গতকাল সারা দেশে বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের এমপিদের প্রত্যক্ষ নির্দেশে কোথাও কোথাও সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিএনপিসহ নিরীহ জনগোষ্ঠীর ঘরবাড়ি, জানমালের ওপরে হামলা করেছে, যার দৃশ্য আপনার নিজেরাই অবলোকন করেছেন। যারা গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছেন তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু এবং ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স প্রমুখ।