আ.লীগ মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্রে বিশ্বাস করে না : আহমেদ আযম খান

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান বলেছেন, ‘যে আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, তা আজ ভুলুণ্ঠিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূলমন্ত্র ছিল—সাম্য, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেগুলো ধ্বংস করেছে। কারণ আওয়ামী লীগ কখনোই এগুলো মানে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত যত অসাংবিধানিক কর্মকাণ্ড হয়েছে, সবই তারা করেছে। কারণ তারা মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্রকে বিশ্বাস করে না।’
রাজধানীতে আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আযম খান এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী এবং বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দেশপ্রেমিকের করণীয়’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আহমেদ আযম খান বলেন, ‘আমরা ক্ষমতার জন্য নয়, দেশকে বাঁচানোর জন্য লড়াই-সংগ্রাম করছি। আজ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সারা দেশে কোটি কোটি মানুষ জেগে উঠেছে। তিনি ১০ দফা ও রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের জন্য ২৭ দফা ঘোষণা করেছেন। এসব দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আসুন সবাই মিলে চলমান শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে আরও বেগবান করি। দেশপ্রেমিক সবাইকে আজ মাঠে নামতে হবে। যেমনটি ইয়ুথ ফোরামের নেতৃত্বে ১৫টি সংগঠন ঐক্যবদ্ধ জোট করেছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে ইনশাআল্লাহ গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় নিতে বাধ্য হবে। তারা পালানোর পথ পাবে না।’
আহমেদ আযম খান বলেন, ‘আমি নিজে জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা শুনেছি, যা তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে তার বইতে লিখেছেন। আজ দেশের মানুষ যখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ছে, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছে, তখনই একটি গোষ্ঠী জিয়াউর রহমান, তার সহধর্মিণী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তাদের ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র করছে। তাদের চরিত্র হনন করতে ষড়যন্ত্র করছে।’
সিনিয়র এ আইনজীবী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত যত অসাংবিধানিক কর্মকাণ্ড হয়েছে, সবই তারা করেছে। কারণ তারা তো মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্রকে বিশ্বাস করে না। তারা শুধু এসবের নামে সুবিধা নিয়ে থাকে। সেজন্যই তো জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, আমার জীবনে শুনিনি যে দিনের ভোট রাতে হয়। এটা তো জঘন্য অপরাধ। এ কথা বলার পর আওয়ামী লীগের গায়ে আগুন লেগেছে। গুম, খুন, অত্যাচার, নির্যাতন ও হামলা-মামলা দিয়ে আমাদের আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করছে সরকার। আমাদের অর্ধকোটি নেতাকর্মী ক্ষমতাসীনদের হামলা-মামলায় পর্যুদস্ত। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা অনেকেই নিঃস্ব। বিএনপির ১০ লাখ নেতাকর্মীর পরিবার নানাভাবে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে।’
ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরীর পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, অ্যাডভোকেট মাইনুদ্দিন মজুমদার, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের এম. জাহাঙ্গীর আলম, জাতীয়তাবাদী নাগরিক দলের শাহজাদা ওমর ফারুক, মৎস্যজীবী দলের ইসমাইল হোসেন সিরাজী, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের আজিজা সুলতানা, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিলের শেখ আলিম উল্লাহ আলিম, সাইফুল ইসলাম শুভ, ইয়ুথ ফোরামের মাহমুদুল হাসান শামীম, কমর উদ্দিন লিটন প্রমুখ।