এক কনের বাড়িতে বরবেশে ৬০ তরুণ!

Looks like you've blocked notifications!
মুন্সীগঞ্জ সদরের রামপালে এক কনের বাড়িতে শেরওয়ানি পরে বরবেশে আসা ৬০ তরুণের একাংশ। ছবি : বরপক্ষের ক্যামেরাপারসন রাসেল রায়হানের সরবরাহকৃত

বরের জন্য অপেক্ষায় তখন কনেবাড়ির সবাই। নির্ধারিত সময়েই পৌঁছাল বরযাত্রী। বিয়ে বাড়ির গেটে থামল বরের মটরসাইকেল। সোনালি রঙের শেরওয়ানি, মাথায় ম্যাচ করে পরা রাজকীয় টোপর, পায়ে নাগরা; সঙ্গে করোনার বিধিনিষেধ মেনে মুখে মাস্ক। এমন পোশাকে দারুণ মানিয়েছিল বরকে। কিন্তু হতবিহ্বল হয়ে পড়লেন কনেপক্ষ! বরের পোশাকে একে একে থামল প্রায় অর্ধশত মোটরসাইকেল। আর সেখান থেকে নেমে এলো একই পোশাকের ৬০ জন। 

বরযাত্রীর প্রস্তাব—যে আসল বরকে খুঁজে বের করতে পারবে, তাকে দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা পুরষ্কার। এমন সব কাণ্ডে আমোদী হয়ে ওঠে সেখানে উপস্থিত সবাই। শুরু হয় চুলচেড়া বিশ্লেষণ, উদ্দেশ্য—খুঁজে বের করতে হবে জার্মান প্রবাসী বর তারিক আজিজ রাজনকে। 

শেষমেশ অবশ্য কেউই হতে পারেনি জয়ী। অগত্যা বারযাত্রীদের মধ্য থেকে বর নিজেই আত্মপ্রকাশ করলেন। ফলে বিয়ের গেটে পুরষ্কারের টাকা আর জেতা হলো না কনেপক্ষের কারও। এরপর আনন্দঘন মুহূর্তে সম্পন্ন হয় বিয়ে।   

ঘটনাটি ঘটেছে আজ শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে মুন্সীগঞ্জ সদরের রামপাল ইউনিয়নের ধলাগাঁও গ্রামের এক কনের বাড়িতে। 

কনের বাড়ি সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিকভাবে জেলার টঙ্গিবাড়ী উপজেলার উত্তর বেতকা গ্রামের প্রয়াত আজিজুল রহমানের ছেলে জার্মান প্রবাসী তারিক আজিজ রাজনের সঙ্গে সদরের ধলাগাঁও গ্রামের হানিফ দেওয়ানের মেয়ে আমেনা আক্তার স্বর্ণালীর বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিকেল ৩টার দিকে বরযাত্রী এসে উপস্থিত হয় কনের বাড়িতে। এ সময় অন্তত ৬০ তরুণ শেরওয়ানি পরে বর সেজে মোটরসাইকেলে চড়ে বিয়েবাড়িতে আসেন। 

পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বরসহ শেরওয়ানি পরা সবাইকে আপ্যায়ন করা হয়। সবশেষে সন্ধ্যার দিকে বর তারিক আজিজ ও কনে আমেনা আক্তারের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

বরের বন্ধু শরিফ ঢালী বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা ছিল বরবেশে বন্ধুরা কনের বাড়িতে যাব। তাই প্রায় ৬০ জন বন্ধু শেরওয়ানি পরেছিলাম। দেখতে চেয়েছিলাম, কনের বাড়ির লোকজন বরকে খুঁজে বের করতে পারে কি না। আমরা কনের বাড়ি পৌছেই সাঁজানো গেটে ঘোষণা দিয়েছিলাম যে, আমাদের মধ্য থেকে আসল বরকে খুঁজে বের করতে পারলে  ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেব। কিন্তু কেউ খুঁজে পায়নি।’

শরিফ ঢালী আরও বলেন, ‘বন্ধু জার্মান প্রবাসী বরই আমাদের সবার জন্য ওই শেরওয়ানি কিনে দিয়েছেন।’