ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা যেত : মির্জা ফখরুল

Looks like you've blocked notifications!
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ সোমবার দলের চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি : বিএনপির মিডিয়া সেল

রাজনৈতিক সংকটের এই সময়ে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য সৃষ্টি করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা যেত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সরকার জাতির কাছে অপরিচিত এক ব্যক্তিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করেছে। তবে, রাষ্ট্রপতি যেভাবে আসুক, তিনি রাষ্ট্রপতি। তার ভূমিকা দেখার বিষয়।

আজ সোমবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীতে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নতুন রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব নিলেন পাঁচ বছরের জন্য। রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের অভিভাবক। যদিও তার নির্বাহী ক্ষমতা তেমন নেই। প্রধানমন্ত্রী ও বিচারপতি নিয়োগ তাঁর প্রধান কাজ। তবে, তাঁর তেমন ভূমিকা নেই। সংসদীয় গণতন্ত্রে সীমিত থাকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা। দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে ও বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁর গুরুত্ব কম নয়। তবে, রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তাঁর ভূমিকা খাটো করে দেখার কিছু নেই। তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে পরিস্থিতি চরমভাবে ঘনীভূত হয়েছে। তার ভূমিকা দেশের মানুষের কাছে, রাজনীতিতে হালকা নয়। সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রত্যাশা এবার অন্যরকম৷ যদিও তিনি কী বলবেন জানা নেই। তিনি দলীয় হবেন কিনা, দলের উদ্দেশ্য পূরণ করবেন কিনা, নাকি দেশের জন্য কাজ করবেন, সেটা তাঁর ওপর নির্ভর করবে।’ 

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক সংকট সমাধানে রাষ্ট্রপতির অবদান রাখার সুযোগ আছে, কিন্তু নতুন রাষ্ট্রপতি কতটা করবেন সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে। জাতির কাছে যিনি অতটা পরিচিত নন, এমন একজন ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি হওয়ায় বিএনপি কিছুটা হতাশ।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার যদি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার গঠন করতে চাইত, তাহলে রাষ্ট্রপতি নিয়োগের ক্ষেত্রেও বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে কথা বলতে পারত৷ যাকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা হয়েছে, হঠাৎ অপ্রত্যাশিতভাবেই এসেছেন তিনি। রাজনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে তার ভূমিকা কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই পারে জনগণ।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগেও এমন অনেক লোক ছিলেন, যাদের মধ্য থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করলে জনগণও খুশি হত।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যেভাবে আসুক, তিনি রাষ্ট্রপতি। তার ভূমিকা দেখার বিষয়। যে প্রক্রিয়ায় তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তিনি সরকারপ্রধানের খুবই আস্থাভাজন। সরকার আবারও একতরফা নির্বাচন করতে চায়। তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু নিয়ে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করতে চায় না। তবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না।’

বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রসঙ্গে কোনো প্রত্যাশাও ছিল না জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তিনি খাঁটি আওয়ামী লীগ নেতা ছিলেন। মানুষ হিসেবে তিনি খুব ভালো প্রাণবন্ত মানুষ। তবে, তাঁর দিক থেকে তিনি কতটা বা কী করতে পারতেন, সেটা সবারই জানা।’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনা হবে-দলের প্রতিশ্রুতি স্মরণ করিয়ে দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা হওয়া উচিত। একটা ব্যক্তির কাছে সর্বময় ক্ষমতা থাকতে পারে না। সেজন্যই আমরা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনার কথা বলছি।’ 

ব্রিফিংয়ের সময় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।