ওয়াজ মাহফিলের ঘটনায় মেজর আখতারের ক্ষমা প্রার্থনা

Looks like you've blocked notifications!
ওয়াজ মাহফিলের ঘটনায় ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষমা প্রার্থনা করছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন। ছবি : ফেসবুক লাইভের ভিডিও থেকে

ওয়াজ মাহফিলে বিতর্কিত কথা বলে জনতার হাতে লাঞ্ছিত হয়ে অবশেষে ক্ষমা চাইলেন কিশোরগঞ্জ-২ আসনের (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত আলোচিত নেতা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন।

গতকাল রোববার দিনগত রাত ১২টা ১৭ মিনিটে ফেসবুক লাইভে এসে মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমার কোনো বক্তব্য ও ভুল-ভ্রান্তি যদি আপনাদের মনোপীড়ার কারণ হয়ে থাকে, যে কারণে আপনারা কষ্ট পেয়ে আমাকে যে গালিগালাজ করেছেন—তার জন্য আমার কোনো অভিযোগ নাই। আপনাদের কথা আমি মাথা পেতে নিলাম। আমি যদি আপনাদের কষ্ট দিয়ে থাকি, আমার কথায় আপনারা যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন, মনে আঘাত পেয়ে থাকেন, আমি আপনাদের সবার কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাচ্ছি। আমি আশা করি, এই বিষয়টি নিয়ে যদি কারো কোনো কথা বলার থাকে—আমাকে ডাকবেন, যেখানেই ডাকবেন, যেভাবেই ডাকবেন; আমি আপনাদের সবার সঙ্গে এসে কথা বলব।’

উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে কটিয়াদী উপজেলার সহশ্রাম ধূলদিয়া ইউনিয়নের গচিহাটা কলেজ মাঠে স্থানীয় ইমাম ও ওলামাদের আয়োজনে ওয়াজ মাহফিলে মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জনকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ৩৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাল হয়।

ওয়াজ মাহফিলে বিশেষ বক্তা হিসেবে ওয়াজ করেন ঢাকা লালবাগ জামিয়া কোরআনিয়া লালবাগ মাদ্রাসার শায়খুল হাদিস মুফতি মাওলানা আরিফ বিন হাবিব। তাঁর বক্তব্যের পর মঞ্চে মাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেওয়ার সময় আখতারুজ্জামান রঞ্জন বলেন, ‘হুজুর যা বলছেন, তা অনেকটাই ভুল।’ তিনি শবে মেরাজে বর্ণিত রাসুল (সা.) নিয়ে বর্ণিত অনেক ঘটনা অসত্য ও কাল্পনিক বলে দাবি করেন।

এ সময় ওয়াজ মাহফিল শুনতে আসা লোকজন উত্তেজিত হয়ে আখতারুজ্জামান রঞ্জনের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাতে থাকেন এবং মাইক ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানালেও তিনি কথা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি ধমক দিয়ে সবাইকে চুপ থাকতে বললে লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে অনেকেই তাঁকে লক্ষ্য করে জুতা নিক্ষেপ করে।

এ সময় ওয়াজ মাহফিল শুনতে আসা একজন ব্যাংকার মন্তব্য করেন, ‘গচিহাটার পরিস্থিতিটা মেজর সাহেব নিজেই তৈরি করেন। যিনি বক্তা হিসেবে একটু আগে ওয়াজ শেষ করলেন তিনি একজন সম্মানিত আলেম। তাঁর ভক্ত অনুরক্তরা মাহফিলে এসেছিলেন তাঁর ওয়াজ শোনার জন্য। মেজর সাহেবের ওয়াজ শুনতে কেউ আসেননি। ওয়াজের কোনো কথায় আপত্তি থাকলে ভদ্রোচিত ভাষায় সমালোচনা করতে পারতেন। তা না করে পুরো ওয়াজটাকে তিনি যেভাবে মিথ্যাচার বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং বক্তাকে মিথ্যাবাদী বলেছেন—এর ফলে এমন প্রতিক্রিয়া হতেই পারে।’

অনেকই বলেন, অতিথি বক্তাকে পাশে বসিয়ে রেখেই মাইক হাতে নিয়ে সমালোচনা করা ঠিক হয়নি। ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত না হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে একজন আমন্ত্রিত আলেমকে অবজ্ঞা করা উচিত নয়।