কবি হেলাল হাফিজের জন্মদিন কাটল হাসপাতালের কেবিনে

Looks like you've blocked notifications!
কবি হেলাল হাফিজ। নান্দিক সম্পাদক কবি ইসমত শিল্পীর ওয়াল থেকে সংগৃহীত

পুলিশের গুলিতে তখন নিহত ছাত্রনেতা আসাদের রক্তাক্ত জামা হাতে মিছিলে ছাত্ররা। গুলিতে নিহত হয়েছে নবকুমার ইনস্টিটিউটের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মতিউর। সেনা ও ইপিআরের গুলিতে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মারা গেছেন মা আনোয়ারা বেগম। গণআন্দোলনে চারদিক তখন উত্তপ্ত। সালটি ঊনসত্তর।

অগ্নিঝরা এমন দিনের প্রভাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি দেওয়াল ছেয়ে গিয়েছিল একই পঙক্তিমালায়—‘এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়...।’ ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ শিরোনামের এই কবিতার জনক কবি হেলাল হাফিজ। আজ শুক্রবার তাঁর ৭৪তম জন্মবার্ষিকী, ৭৫তম জন্মদিন। এদিন হাসপাতালের কেবিনেই কাটে কবির দিন। অনুরাগী ও শুভাকাঙ্খীদের অনেকে ঘরোয়াভাবে উদযাপন করেন কবির জন্মদিন।

এদিকে, কবির জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে আনন্দ সন্ধ্যা ও কবির কবিতা নিয়ে রচিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর লেখা ‘ফুল ও ফুলকি’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন। বিকেল ৫টায় ঢাকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৫ম তলায় শুরু হয় অনুষ্ঠানটি। এই অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করা হবে কবি হেলাল হাফিজের কবিতা। 

ভালবাসা ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ অসুস্থ হয়ে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ কবিকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন সাহিত্যের ছোটকাগজ ‘নান্দিক’ সম্পাদক কবি ইসমত শিল্পী। জন্মদিন উপলক্ষে তিনি কবিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। কবিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান শেখ সেলিম ও সমকাল পত্রিকার পক্ষে রিক্তা রিচি।

জানতে চাইলে ইসমত শিল্পী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘কবি হাসপাতালের কেবিনে আছেন। স্বল্প আয়োজনে ঘরোয়া পরিবেশে তাঁকে আমরা শুভেচ্ছা জানাই। পরে ডাক্তার-নার্সসহ সবাই মিলে কেক কাটা হয়।’

১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হেলাল হাফিজ। ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ কবিতার বইটি তাঁকে দিয়েছে কবিত্বের শ্রেষ্ঠত্ব। ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত ‘যে জলে আগুন জ্বলে’র ২৬ বছর পর ২০১২ সালে আসে তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা একাত্তর’। যদিও সেটি মূলত আগের গ্রন্থের সম্প্রসারিত রূপ। ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি হেলাল হাফিজের তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ পায়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ৩৪টি কবিতা নিয়ে ঢাকা ও কলকাতা থেকে প্রকাশ হয় এই গ্রন্থটি। যার নাম ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’।