করোনার ‘কঠিন পরিস্থিতি’র মধ্যে এলেন আরো ৩৪ যুক্তরাজ্যপ্রবাসী

Looks like you've blocked notifications!
লন্ডন থেকে ফেরা যাত্রীদের বিআরটিসির বাসে করে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য সিলেটের হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। ছবিটি গত ৪ জানুয়ারির। ফাইল ছবি : এনটিভি

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের (স্ট্রেইন) সংক্রমণের মধ্যে বাংলাদেশে এসেছেন আরো ৩৪ যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। এর মধ্যে ২৮ জন সিলেটে আর বাকি আটজন ঢাকায় অবতরণ করেছেন।   

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশের বিজি-২০২ ফ্লাইটটি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে। ফ্লাইটে ৩৪ জন যাত্রীর ২৮ জনকে সেখানে নামানো হয়।

এরপর ২৮ যাত্রীকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁরা ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার পর যার যার বাড়িতে যেতে পারবেন। তবে বৃহস্পতিবার সকালের ফ্লাইটে আসা যাত্রীদের সবার কাছে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট ছিল। তাদের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর বিমানবন্দর থেকে ছাড়া হয়।

সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (কোভিড-১৯) শামমা লাবিবা অর্ণব গণমাধ্যমকে বলেন, ওসমানী বিমানবন্দরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে বৃহস্পতিবার আরো ২৮ জন সিলেটের বাসিন্দা লন্ডন থেকে এসেছেন। তাঁদের হোটেলে পাঠানো হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার জন।

সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বলেন, ফ্লাইটে করে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে ৩৪ জন যাত্রী এসেছেন। এর মধ্যে সিলেটে নেমেছেন ২৮ জন। তাদের সবার কাছে করোনা নেগেটিভ সার্টিঢিকেট ছিল। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাদের সবাইকে বাসযোগে নির্ধারিত হোটেলে পাঠানো হয়।

ওসমানী বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহের প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জতিক বিমানবন্দরে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট আসে। সর্বশেষ গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২ জন, গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২ জন, ৩১ ডিসেম্বর ২৩৭ এবং ৪ জানুয়ারি ৪৮ যাত্রী নিয়ে বিমানের চারটি ফ্লাইট ওসমানী বিমানবন্দরে আসে। আসা যাত্রীদের মধ্যে যথাক্রমে ১৬৫, ১৪৪, ২০২ ও ৪১ জন যাত্রী ছিলেন সিলেটের। বাকিরা ঢাকায় চলে যান।

এদিকে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটির সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বাড়তে থাকার মধ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন গত সোমবার ইংল্যান্ডে জাতীয়ভাবে নতুন লকডাউন ঘোষণা করেছেন। টিকা সর্বসাধারণের মাঝে বিতরণের আগ পর্যন্ত কোভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়ে যাতে স্বাস্থ্য খাতের অংশবিশেষ ভেঙে না পড়ে সেজন্য এই লকডাউন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নতুন লকডাউনের নির্দেশনাটি গতকাল বুধবার আইনে পরিণত হয়েছে। লকডাউনে জরুরি কারণ ছাড়া ইংল্যান্ডের সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। গত মঙ্গলবার থেকেই স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা দিবে।

অন্যদিকে, স্কটল্যান্ড আগেই ঘরে থাকার নির্দেশনা জারি করেছে। ওয়েলসের অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের স্কুলগুলোও অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতিতে চলছে। এবং এর সময়সীমা বাড়ানো হবে।

ইংল্যান্ডের এই লকডাউন মধ্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জারি রাখা হতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি বলেছেন, “সংক্রমণ ও রোগী সংখ্যা বাড়তে বাড়তে আসন্ন সপ্তাহগুলো আমাদের জন্য ‘সর্বোচ্চ কঠিন’ অবস্থা হতে পারে। রোগীর ভিড়ে হাসপাতালগুলো মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি চাপে পড়েছে।’’

তবে এই লকডাউনই দেশের জন্য শেষ পর্যায়ের সংগ্রাম হবে বলে বিশ্বাস বরিস জনসনের।