কলারোয়ায় জুয়া খেলতে আসছে আশপাশের জেলা থেকেও
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কয়েকটি স্থানে দেদারসে চলছে ওয়ান টেন ও জুয়া খেলা। এতে আশপাশের জেলা থেকেও লোকজন আসছে। জুয়ার আসর জমজমাট হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ ব্যাপারে কিছুই জানে না বলে দাবি করেছে।
এর মধ্যে কলারোয়ার তুলসীডাঙার আলী ব্রিক্সের পরিত্যক্ত একটি জায়গায় বড় আকারে জমে উঠেছে ওয়ান টেন ও জুয়া খেলা। ডজনখানেক মাদকাসক্ত যুবককে পালাক্রমে পাহারায় রেখে দেদারসে চলছে এই জুয়া। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকছে অনেক প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাত ৮টায় ওয়ান টেন খেলা শুরু হয়। শেষ হয় পরের দিন সকালবেলায়। এরপর আবার দিনেবেলায় বসে রমরমা জুয়ার আসর। এর মধ্যে কিছু সময়ের জন্য বিরতি থাকে। এসব খেলায় অংশ নিচ্ছে খুলনা, যশোর, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা এলাকার জুয়াড়িরা।
জনৈক আমিনুর রহমান নামে এক ব্যক্তি এর পেছনে রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তিনিই সবকিছু ‘ম্যানেজ’ করছেন। দম্ভভরে তিনি বলেন, ‘পত্রিকায় লিখে কিছুই হবে না। কারণ কাকে কীভাবে ম্যানেজ করতে হয়, তা আমরা জানি। পুলিশ বা প্রশাসন যেখানে যাবে কোনো লাভ হবে না।’
এ ছাড়া পাটকেলঘাটার বহু মামলার আসামি ‘টাক রফিক’ এই ওয়ান টেন ও জুয়া খেলার উদ্যোক্তাদের একজন বলে জানা গেছে। তার সহযোগী কলারোয়ার গদখালি গ্রামের মিঠু নামের আরেক যুবক। তাদের হয়ে এই খেলা পরিচালনা করছেন কলারোয়া থানার সামনে বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজের মালিক আমিনুর রহমান। তবে চেষ্টা করেও এদের কারোর সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
ওয়ান টেন ও জুয়ায় প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা উড়ছে। জুয়া খেলার বদৌলতে কলারোয়া পৌর এলাকায় বহিরাগতদের যাতায়াত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সুযোগে অপরাধ প্রবণতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওয়ান টেন জুয়ায় মেতে ওঠা যুবকরা খেলোয়াড় ছাড়া অন্য কাউকে সেখানে ভিড়তে দিচ্ছে না।
এ বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমার বিষয়টি জানা ছিল না। আমি তদন্ত করে দেখছি।’
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবির বলেন, ‘আমাদের কাছে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে জানতে পেরে আমি বলেছি, খেলা চলাকালীন সেখানে দাঁড়িয়ে কেউ মোবাইলে ফোন করলেই আমি পুলিশ ফোর্স নিয়ে হাজির হব এবং এই ওয়ান টেন ও জুয়া লণ্ডভণ্ড করে দেব। কারণ জুয়া খেলার সুযোগ দেওয়া হবে না। এতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে।’