কিশোরগঞ্জে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

Looks like you've blocked notifications!
হত্যাকাণ্ডের শিকার হেনা আক্তারের ভাসুর জালাল মিয়া (বামে), স্বামী খোকন মিয়া (মাঝে) ও ননদ জরিনা খাতুন। ছবি : সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী, ননদসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ এই রায় দেন। একইসঙ্গে তাঁদেরকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এসময় আসামিরা উপস্থিতি ছিলেন। রায়ে অন্য তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।

মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—হত্যাকাণ্ডের শিকার হেনা আক্তারের স্বামী জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার গুজাদিয়া ইউনিয়নের খৈলাকুড়ি গ্রামের খোকন মিয়া (৩৯), ননদ জরিনা খাতুন (৩৭) ও তাঁদের মামাতো ভাসুর জালাল মিয়া (৪৩)।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট এমএ আফজাল সাজার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাজাপ্রাপ্ত খোকন মিয়াকে ৫০ হাজার, জালাল মিয়াকে ৩০ হাজার ও জরিনা খাতুনকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার গুজাদিয়া ইউনিয়নের খৈলাকুরী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে হেনা আক্তারের সঙ্গে একই ইউনিয়নের বন্ধগোমরা এলাকার বাসিন্দা ইমান আলীর ছেলে খোকনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের দুটি মেয়ে সন্তান হয়। কিন্তু, বিয়ের পর থেকেই হেনার ওপর স্বামী খোকনসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। হেনা বেশ কয়েকবার তাঁর বাবার কাছ থেকে স্বামীকে টাকা এনে দেন।

বোনের সুখের চিন্তা করে স্বামী খোকন মিয়াকে একটি দোচালা টিনের ঘর তৈরি করে দেন হেনা আক্তারের ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম। এ ছাড়াও খোকনকে ব্যবসার জন্য ৪০ হাজার টাকা দেন। কিছুদিন পর আবারও যৌতুকের জন্য এক লাখ টাকা দাবি করে চাপ সৃষ্টি করেন স্বামী ও তাঁর পরিবার। কিন্তু, এ টাকা দিতে অস্বীকার করলে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার ওপর অত্যাচার নির্যাতন শুরু করেন। পরে ২০১৫ সালের ৪ অক্টোবর রাতে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন স্বামীসহ তাঁর আত্মীয়স্বজন।

এ ঘটনায় নিহত হেনার ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে স্বামীসহ ছয়জনকে আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা করিমগঞ্জ থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক জহিরুল ইসলাম ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আকন্দ ও অ্যাডভোকেট শ্যামল কুমার সরকার মামলাটি পরিচালনা করেন।