কুষ্টিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১০ জনের যাবজ্জীবন

Looks like you've blocked notifications!
কুষ্টিয়ায় মোল্লা মাসুদ করিম লাল্টু হত্যা মামলায় যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি। ছবি : এনটিভি

কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলায় আলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। অপর এক মামলায় চারজনের যাবজ্জীবন ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক তাজুল ইসলাম এবং বিশেষ দায়রা জজ মো. আশরাফুল ইসলাম পৃথক দুটি আদালতে এ রায় দেন।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার দহকুলা এলাকার আলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বিশ্বাস (৬০), বাবুল বিশ্বাস (৪৫), হাবিল বিশ্বাস (৫১), মাহামুদুল হাসান সবুজ (৩০), রাশেদুল ইসলাম বিদ্যুৎ (৪১), মাসুদ গায়েন (৩৯) এবং রাজবাড়ী জেলার তেঁতুলিয়া এলাকার জিল্লুর রহমান (৩০), একই এলাকার তারেক শেখ ওরফে মাধব (৩০), জাহিদ খাঁ (৩০), সিংড়া এলাকার সৌরভ মিয়া (৩৬)। 

রায় ঘোষণার সময় আসামি আক্তারুজ্জামান বিশ্বাসসহ ছয়জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর পরই তাদের পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। সাজাপ্রাপ্ত অন্য চার আসামি পলাতক রয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার দহকুলা গ্রামে ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে পূর্ব শত্রুতারর জেরে ও ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মোল্লা মাসুদ করিম লাল্টুকে কুপিয়ে হত্যা করেন আসামিরা। নিহতের ভাই মাহবুবুল করিম মোল্লা আসামিদের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। নিহত মোল্লা মাসুদ করিম লাল্টু দহকুলা গ্রামের সোহরাব উদ্দিন মোল্লার ছেলে। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আজ রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত তারিখে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক তাজুল ইসলাম ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বিশ্বাসসহ ছয় জনের যাবজ্জীবনের আদেশ দেন।

কুষ্টিয়ায় মিঠু শেখ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি। ছবি : এনটিভি

অপরদিকে, ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর কুষ্টিয়ার কুমারখালী এলাকার চরসাদিপুর ইউনিয়নের গোবিন্দ চরের ঘাটে কৃষক মিঠু শেখের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর দিন ১ নভেম্বর কুমারখালী থানার এসআই লিয়াকত আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে তদন্ত শেষে ২০১৪ সালে ৩১ অক্টোবর ৩০২/৩৪ ধারায় চারজনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দেন কুমারখালী থানার পরিদর্শক সিকদার আলী আক্কাস। তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করে, পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে অভিযুক্তরা মিঠু শেখকে (২৪) কুপিয়ে হত্যা করে। দীর্ঘ বিচারকার্য শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আজ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিশেষ দায়রা জজ মো. আশরাফুল ইসলাম এ রায় দেন।

কুষ্টিয়া কোর্টের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী পৃথক এ রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘দীর্ঘ বিচারকার্য শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দুটি মামলায় ১০ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।’