ক্ষেত থেকে পিস হিসেবে কিনে কেজিতে বিক্রি, মোংলায় তরমুজের বাজার গরম

Looks like you've blocked notifications!
রমজানে প্রচণ্ড গরমে ইফতারে তরমুজ খেতে চাইলেও দামের কারণে তা কঠিন হয়ে পড়ছে নিম্ন-মধ্যবিত্তদের জন্য। ছবি : এনটিভি

পবিত্র মাহে রমজানে প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে সাধারণ মানুষ। তার মধ্যে চলমান দাবদাহ থেকে সামান্য পরিত্রাণ পেতে মৌসুমি রসালো ফল তরমুজের চাহিদাও বেড়েছে। ইফতারে বেশ উপাদেয় এই ফলটি। কিন্তু সিন্ডিকেটের অপতৎপরতায় পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ফল তরমুজে হাতই দিতে পারছে না মোংলার মানুষ। আকাশছোঁয়া দামের কারণে তরমুজের বাজারে আগুন লেগে গেছে। স্বাদ নিতে পারছেন না নিম্ন-মধ্যবিত্ত আয়ের লোকজন।

আজ বুধবার দুপুরে মোংলা পৌর শহরের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত বছর যে তরমুজ ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে এবার সেই সমান সাইজের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। এমনকি তরমুজ ব্যবসায়ীরা আগের সব নিয়ম ভেঙে পিস হিসেবের পরিবর্তে চড়া দামে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করছেন।

ব্যবসায়ীরা বলেন, এক কেজি তরমুজের দাম চলছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এতে পাঁচ কেজি একটি তরমুজ কিনতে হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়। অথচ এই তরমুজ ১৫০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়।

তরমুজ কিনতে আসা ক্রেতা আব্দুস সালাম, কবির হোসেন, আবুল বাসার ও আলআমিন সবার প্রায় একই অভিযোগ। তারা বলেন, পাইকার, আড়ৎদার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা মিলেই সিন্ডিকেট গড়ে তরমুজের দাম বাড়িয়েছে। বাধ্য হয়েই তাদের বেঁধে দেওয়া দামে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে তরমুজ কিনতে বাধ্য হলেও প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই।

রমজানের শুরু থেকে স্থানীয় প্রশাসন বাজার মনিটরিং বা এই সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে অভিযানে নামলে দাম কিছুটা নাগালে আসতে শুরু করে বলেও জানান ক্রেতারা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মোংলা পৌর শহরের প্রধান বাজারের শাহ আলম, বাবুল, ইব্রাহিম, সিরাজ, বাচ্চু, সুমন, মোস্তফা, বাদশা ও মোয়াজ্জেম তরমুজ সিন্ডিকেটের মূল হোতা। সিন্ডিকেট করে বাজারে তরমুজের দাম অস্বাভাবিক করেছেন তারাই। তবে সিন্ডিকেটের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তারা। ভালো ফলন না হওয়া ও বেশি দামে তরমুজ কিনে আনতে হয় বলে দাবি তাদের।

এদিকে মোংলার আশপাশ এলাকা লাউডোব, বাজুয়া, পিরোজপুর, বাগেরহাট ও মোড়েলগঞ্জ এলাকার কয়েকজন চাষীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্ষেত থেকে তোলা তরমুজ তারা কেজিতে বিক্রি করছেন না। চাষীরা তরমুজ ১০০টি হিসেবে বিক্রি করেন।

মোংলা উপজেলা বাজার মনিটরিং কমিটির সদস্য ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. নুর আলম শেখ বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের ওপর রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় প্রভাবশালী মহল চাঁদাবাজি করছে। যার ফলে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চক্র বেপরোয়াভাবে তরমুজের দাম বাড়িয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ব্যবসায়ীরা তাদের রাম রাজত্ব অব্যাহত রাখছে।’

মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, ‘প্রথম দিকে তেমন কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে এখন বিভিন্ন অভিযোগ পাচ্ছি। আজকালের মধ্যেই তরমুজ সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।’