খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় কৃষিবিদরা কাজ করে যাবে : কৃষিমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
ময়মনসিংহে আজ সোমবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি চত্বরে কৃষিবিদ দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিবিদ ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। ছবি : এনটিভি

কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিবিদ ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘দেশের ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় আমরা সকল কৃষিবিদ নিরলসভাবে কাজ করে যাব। ৫০ বছর আগে ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) চত্বরে এসে কৃষিবিদদের সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদার ঘোষণা দিয়েছিলেন।’

আজ সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু স্মৃতি চত্বরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে, আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ ও কেক কেটে কৃষিবিদ দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

১৯৭৩ সালে ১৩ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতার ঐতিহাসিক ঘোষণার সময়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তরুণ ছাত্রনেতা বর্তমান কৃষিমন্ত্রী কৃষিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক। সেই অমর স্মৃতিকে স্মরণ করে মন্ত্রী বলেন, ‘কৃষিপেশায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষিবিদদের সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদার ঘোষণা দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির জন্যও নানান সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি করেছিলেন। কাজেই এই দিনটি দেশের সকল কৃষিবিদদের জন্য পরম আনন্দের, গৌরবের ও অহংকারের।’

মন্ত্রী বলেন, কৃষিবিদ দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীতে আজ সকল কৃষিবিদদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস, উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কৃষিক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, সকল কৃষিবিদ আজকের এই উৎসাহ-উদ্দীপনা ধারণ করে তা অব্যাহত রাখবে। চাল, ভুট্টা, শাক-সবজি, আলু, মাছ, মাংস, দুধ, ডিমসহ কৃষি উৎপাদনের সাফল্যকে আরও বৃদ্ধি করা হবে।

ড. রাজ্জাক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদদের মর্যাদা দিয়ে বলেছিলেন আমার মান রাখিস। এই ৫০ বছরে দেশের কৃষিবিদেরা বঙ্গবন্ধুর সেই আশা পূরণ করেছেন। বর্তমান সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির কল্যাণে কৃষিবিদ ও কৃষকের অবদানে দেশের কৃষি আজ নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। স্বাধীনতার পর সাড়ে সাত কোটি মানুষের খাদ্য যোগান সম্ভব হতো না। খাদ্যের জন্য অন্যের উপর নির্ভরশীল থাকতে হতো। আর এখন ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য আমরা উৎপাদন করছি। খাদ্যের কোনো সংকট হয় না। বিগত ৫০ বছরে চালের উৎপাদন চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু মোট উৎপাদন নয়,  এই ৫০ বছরে উৎপাদনশীলতাও বেড়েছে সাড়ে চার গুণ।

পরে কৃষিমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম আয়োজিত কৃষিবিদ দিবসের সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দেন।

সেমিনারে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র ইকরামুল হক টিটু, বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফুল হাসান, বাকৃবি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবুল ফয়েজ কুতুবী, বাকৃবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ইয়াছিন আলী, বাকৃবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. রহমতুল্লাহ, বাকৃবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মো. নজিবুর রহমান

বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক হামিদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন। গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সভাপতি আবু হাদী নূর আলী খানের সভাপতিত্বে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাকৃবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমএ সাত্তার মণ্ডল।

সুবর্ণজয়ন্তীর দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি ও সেমিনারে সারা দেশ থেকে দুই হাজারের বেশি নবীন-প্রবীণ কৃষিবিদ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।