খালেদা জিয়া অন্তিম পরিণতির দিকে যাচ্ছেন, দায় সরকারের : ড্যাব
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। আজ শনিবার সংগঠনের দুই হাজার ৬৮৪ জন চিকিৎসক এক যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘খালেদা জিয়া করোনা পরবর্তীতে জটিলতা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রিউমোটয়েড আর্থাইটিস, লিভার, কিডনি ও হার্টের বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে গত ১৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। বর্তমানে দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।’
চিকিৎসকরা উল্লেখ করেন, ‘খালেদা জিয়া এদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তনে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করেন। দীর্ঘ নয় বছর স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে রাজপথে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশে সংসদীয় সরকার পুনঃপ্রবর্তন করেন, কৃষকদের কৃষিঋণ মওকুফ করেন, শিক্ষাকে সার্বজনীন করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক করে উপবৃত্তি চালু করেন, নারীশিক্ষা প্রসারের জন্য প্রথমে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক পরে ডিগ্রি পর্যন্ত অবৈতনিক করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করেন, নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করেন। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের সম্মান সমুজ্জ্বল করতে তিনি সর্বদাই সচেতন ছিলেন। তাঁর পূর্বমুখী পররাষ্ট্রনীতি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখে। তাছাড়া বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির চারণভূমি নামে খ্যাত আরব বিশ্বের সঙ্গেও তাঁর সময়ে সম্পর্ক ছিল অতি নিবিড়, ফলশ্রুতিতে আজ রেমিট্যান্স প্রবাহ ঊর্ধ্বমুখী। বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে খালেদা জিয়ার অবদান অপরিসীম। অথচ আমরা বেদনাহত হৃদয়ে লক্ষ্য করছি, একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার পছন্দমতো চিকিৎসা নেওয়ার অধিকার থেকে তিনি ক্রমাগতভাবে বঞ্চিত।’
বিবৃতিতে আরও বলেন, ‘একটি মিথ্যা সাজানো মামলায় ফরমায়েশী রায়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকেই চিকিৎসা বঞ্চিত হওয়ার ফলশ্রুতিতে আজ এই ভয়াবহ শারীরিক জটিলতায় উপনীত। একটি পরিত্যক্ত কারাগারে একক ব্যক্তি হিসেবে রেখে তাঁর মানসিক শক্তি ভেঙে দেওয়ারও অপচেষ্টা করা হয়েছে।’
চিকিৎসকরা বলেন, ‘বারবার খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী সরকার কোনো কর্ণপাত করেনি। এমনকি পরিবারের লিখিত আবেদনেরও কোনো গুরুত্ব দেয়নি। প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে আইনের অপব্যাখ্যা দিয়ে বারবার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। গত তিন বছরে সরকারের নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে বয়স্ক এই নারী বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘চিকিৎসা ব্যবস্থায় বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমানভাবে এগিয়ে গেলেও এখনও বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা বিদ্যমান। যার ফলশ্রুতিতে এদেশের চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আশানুরূপ আরোগ্য লাভের পরিবর্তে ধীরে ধীরে অন্তিম পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় চিকিৎসক হিসেবে আমাদের আকুল আহ্বান জরুরি ভিত্তিতে তাঁর মুক্তির ব্যবস্থা গ্রহনপূর্বক বিদেশে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হোক। অন্যথায় চিকিৎসার অভাবে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায় দায়িত্ব সরকারের বর্তমান নীতিনির্ধারকদের বহন করতে হবে।’
বিবৃতিতে ড্যাবের স্বাক্ষরকারী চিকিৎসকরা হলেন-
অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, ডা. মো. আব্দুস সালাম, ডা. মো. আব্দুস সেলিম, অধ্যাপক ডা. শহিদুল আলম, ডা. শাহাদাত হোসেন, অধ্যাপক ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম, ডা. মো. শহিদ হাসান, ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, অধ্যাপক ডা. এ কে এম আজিজুল হক, অধ্যাপক ডা. শামীমুর রহমান, অধ্যাপক ডা. গাজী আব্দুল হক, অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল্লাহ, অধ্যাপক ডা. মঈনুল হাসান সাদিক, অধ্যাপক ডা. শাহাব উদ্দিন, অধ্যাপক ডা. মওদুদুল হক পাভেল, অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান সরদার, ডা. মো. ওবায়দুল কবির খান, ডা. তৌহিদুর রহমান ববি, অধ্যাপক ডা. সিরাজ উদ্দিন, অধ্যাপক ডা. জসিম উদ্দিন, অধ্যাপক ডা. রফিকুল কবির লাবু, অধ্যাপক ডা. নুর উদ্দিন, অধ্যাপক ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, অধ্যাপক ডা. মো. আমিনুল হক, অধ্যাপক ডা. মঈনুল হক সরকার, অধ্যাপক ডা. শহিদুর রহমান, অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক ডা. শাহ মো. শাহজাহান আলী, অধ্যাপক ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. রফিকুল সালেহীন, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. মো. মেহেদী হাসান, ডা. এ কে এম মহিউদ্দিন ভুঁইয়া মাসুম, ডা. বি. গনি ভূঁইয়া, ডা. সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিশ সিমকি, ডা. কাজী সাইফুদ্দিন বেন্নুর, ডা. এরফানুল হক সিদ্দিকী, ডা. পরিমল চন্দ্র মল্লিক, ডা. আমিনুর রশিদ লিটন, ডা. তমিজ উদ্দিন মানিক, ডা. জিন্নুরাইন নিউটন, ডা. এ কে এম মজিবুল হক দোয়েল, ডা. আবু হেনা হেলাল উদ্দিন, অধ্যাপক ডা. কাজী মাযহারুল ইসলাম দোলন, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডা. শেখ ফরহাদ, ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, ডা. আবুল কেনান, অধ্যাপক ডা. এ টি এম ফরিদ উদ্দিন, ডা. রিদওয়ানুল ইসলাম, ডা. বদর উদ্দিন সোহেল, ডা. শামসুল আলম, ডা. হাসানুল আলম শামীম, ডা. শহিদুল হাসান বাবুল, অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম, ডা. এম এ আলিম, ডা. মো. ফয়েজুর রহমান, ডা. রেজাউল আলম নিপ্পন, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, ডা. হারুন উর রশিদ খান রাকিব, ডা. মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, ডা. মো. আবু নাসের, ডা. একরামুল রেজা টিপু, ডা. মনিরুল ইসলাম চয়ন, ডা. এ কে এম খালেকুজ্জামান দিপু, ডা. মো. আকরামুজ্জামান, ডা. আতিকুর রহমান সুজন, ডা. মতিউর রহমান আজাদ, ডা. এ কে এম কবির আহমেদ রিয়াজ, ডা. তরিকুল ইসলাম আয়াজ, ডা. দিদারুল আলম, ডা. মো. আরিফুজ্জামান পলাশ, ডা. আসফাক নবী কনক, ডা. মুরাদ হোসেন, ডা. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, ডা. সৈয়দ ইমতিয়াজ উদ্দিন সাজিদ, ডা. এস এ মাহবুব মুন্না, ডা. এরফান আহমেদ সোহেল, ডা. গালিব হাসান, ডা. সায়েম মনোয়ার, ডা. তৌফিক আহসান জয়, ডা. সারওয়ার আলম, ডা. শাওন বিন রহমান, ডা. এনামুল হক, ডা. মো. শহিদুল ইসলাম, ডা. মারুফ হাসান, ডা. জাহাঙ্গীর আলম, ডা. স্বপন কুমার মণ্ডল, ডা. কাজী মুহাম্মাদ কামরুল ইসলাম, ডা. মশিউর রহমান কাজল, ডা. মোহাম্মদ আবু সায়েম, ডা. শামসুজ্জমান রানা, ডা. মুহাম্মদ সাইদ মাহমুদ, ডা. আবুল ফাত্তাহ, ডা. বাসেদুর রহমান সোহেল, ডা. শাহনেওয়াজ দেওয়ান, ডা. আবু সাইদ মো. মহিবুল্লাহ, ডা. বশির আহমেদ হৃদয়, ডা. নাজমুল আহসান রনি, ডা. নিলুফা ইয়াসমিন, ডা. জাকিয়া সুলতানা, ডা. শহিদুল হক রাহাত, ডা. মেহবুব আহসান রনি, ডা. মাসরুক জাহান সাকলাইন, ডা. শামসুল আরেফিন সুমন, ডা. এম এ সাইদ সিদ্দিকী জনি, ডা. আসলাম উদ্দিন, ডা. ফারুক আহমেদ, ডা. আরাফাত রহামন পাভেল, ডা. মো. সায়েম, ডা. মোস্তাহিজুর রহমান, ডা. মোহাম্মদ আল আমিন, ডা. মো. রাকিবুজ্জামান, ডা. মজিবুর রহমান হাওলাদার, ডা. শরিফুল ইসলাম মণ্ডল, ডা. সাইফুল ইসলাম, ডা. মারুফ আহমেদ, ডা. শাহ মো. ফয়সাল ইসকান্দার জয়, ডা. সিরাজুল সালেহীন প্রিন্স, ডা. বদরুল আলম মিলন, ডা. রহুল আমীন খান খোকন, ডা. মিজানুর রহমান প্রমুখ।