খেলাপি ঋণ বাড়ার লাগাম টানতে হবে : আইনমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। ছবি : এনটিভি

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে অর্থনীতির শত্রু হিসেবে চিহ্নিত খেলাপি ঋণের পরিমাণ সরকার কমিয়ে আনতে চায়। কারণ ঋণখেলাপি মামলাজট দেশের অর্থনীতির ওপর বিরুপ প্রভাব ফেলছে। বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে আমাদের অবশ্যই ঋণখেলাপি মামলাজট খুলতে হবে এবং এই মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে খেলাপি ঋণ বাড়ার লাগাম টানতে হবে।

আজ শনিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ও সমপর্যায়ের বিচারকদের জন্য আয়োজিত রিফ্রেশার কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।

আইনমন্ত্রী বলেন, ঋণ খেলাপি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সরকার অর্থঋণ আদালত আইন সংশোধন করে আদালতের বাইরে এডিআর বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতিতে মামলা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করেছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, মামলার পক্ষগণের অনাগ্রহের কারণে এডিআর পদ্ধতির সফল প্রয়োগ হচ্ছে না। ঋণ খেলাপি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে- এডিআর পদ্ধতিকে আরও কার্যকরভাবে অনুসরণ করতে হবে। এর পাশাপাশি শুনানি পর্যায়ে বিবাদীর অযৌক্তিক কালক্ষেপণ রোধ করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, ন্যায়বিচারের সঙ্গে সামাজিক অপরাধ, রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা ও নাগরিক জীবনের নিরাপত্তাসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকারগুলো নিবিড়ভাবে জড়িত। তাছাড়া ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন ব্যতীত রাষ্ট্রের প্রকৃত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি লাভ করা যায় না।

মামলাজটের পরিসংখ্যান তুলে ধরে আনিসুল হক বলেন, দেশের আদালতগুলোতে দায়েরকৃত সিভিল মামলার অর্ধেকেরও বেশি ভূমি সম্পর্কিত। অনেক ফৌজদারি মামলার মূলেও রয়েছে ভূমি বিরোধ। এসব মামলার বিচার পাওয়ার জন্য প্রতিদিন লাখ লাখ বিচারপ্রার্থীকে আদালতে ধরনা দিতে হয়। এতে যে কেবল তাদের সময় ও অর্থ অপচয় হচ্ছে তা নয়, মূল্যবান কর্মঘণ্টাও নষ্ট হচ্ছে। যেসময়ে তাদের উৎপাদনের কাজে থাকার কথা, সেসময় আদালতের বারান্দায় ঘুরে ঘুরে বিচার পাওয়ার প্রহর গুণতে হচ্ছে।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, বিচারকগণ এসব বিষয় গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিবেন এবং জনগণকে দ্রুত ন্যায়বিচার প্রদান করে তাঁদের বিচার পাওয়ার দুর্ভোগ লাঘব করবেন।

প্রশিক্ষণার্থী বিচারকদের উদ্দেশ্যে আইনমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর সারা জীবনের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে এমন এক স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও গতিশীল বিচার বিভাগের স্বপ্ন দেখেছিলেন- যেখানে শোষিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত এবং অসহায় মানুষ স্বল্প খরচে দ্রুত ন্যায়বিচার পাবে। বঙ্গবন্ধুর এই স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন- বিচারক হিসেবে আপনাদের ওপরই নির্ভর করে। এই নির্ভরতা আপনাদেরকে যেমন দায়িত্বশীল করেছে, তেমনি মর্যাদাবানও করে তুলেছে। আপনাদের দায়িত্ব পালনে আমরা সহায়ক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছি মাত্র। আমরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি, দক্ষতার সাথে সুচারুরূপে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আপনাদের দাপ্তরিক সমস্যার যুক্তিসঙ্গত সমাধানসহ পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোটাও অপরিহার্য। আর পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। সে কারণে আমরা দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ কোর্স আয়োজন করে যাচ্ছি।

বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন মন্ত্রণালয় এবং বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।