খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থান ভবন নির্মাণের জন্য দেওয়া যায় না : মেয়র তাপস
রাজধানীতে খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থান (এলাকা) কোনোভাবেই ভবন নির্মাণের জন্য দেওয়া যেতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
সাপ্তাহিক নিয়মিত পরিদর্শন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর যাত্রাবাড়ীর শহীদ শেখ রাসেল পার্ক উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এমন মন্তব্য করেন।
ডিএসসিসি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ‘নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডে র্যাব কর্তৃক খেলার মাঠে অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে, কিন্তু নগরীতে খেলার মাঠের সংকট রয়েছে’—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘আমরা বার বার গণপূর্ত বিভাগকে চিঠি দিয়েছি। র্যাব কর্তৃপক্ষ ও (স্বরাষ্ট্র)মন্ত্রীর সঙ্গে কয়েক দফা আলাপ করেছি। খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থান কোনোভাবেই ভবন নির্মাণের জন্য দেওয়া যেতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর এ ব্যাপারে নির্দেশনা আছে। সেটাও আমি সবার নজরে এনেছি। আমি আশা করব, তারা সেটা সবাই অচিরেই ছেড়ে দেবে। ১১ নম্বর ওয়ার্ডে কোনো খেলার জায়গা নেই। খেলার জায়গা শুধু ওই জমিটাই ছিল। সেটা যেন আমরা আবার ছেলে-মেয়েদের খেলার উপযোগী করে উন্মুক্ত করে দিতে পারি।’
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘আপনারা লক্ষ করেছেন, এই যাত্রাবাড়ী মোড়ে শহীদ শেখ রাসেলের নামে আমরা এই পার্কিটি উদ্বোধন করলাম। এখানে মনোরম একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। যাতে করে এই এলাকার মানুষজন একটি মুক্ত জায়গা পায়, আনন্দঘন সময় যেন তারা অতিবাহিত করতে পারে।’
জলাবদ্ধতা নিরসনে কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাপক কর্মযজ্ঞ হাতে নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মেয়র শেখ তাপস বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে আমাদের স্বল্পমেয়াদী কাজ হলো, স্তূপ আকারে যে বর্জ্য ছিল, সেগুলো পরিষ্কার করা। যাতে করে পানি নিষ্কাশন এবং পানি প্রবাহের সুযোগটা হয়। মধ্যমেয়াদী আমরা কিছু কার্যক্রম নিয়েছি, সেটা হলো–যেখানে অবকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন, নর্দমাগুলোকে সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন, আধারের জায়গাটা সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন, সেসব জায়গুলোতে অবকাঠামো উন্নয়ন করা করা।’
‘এরই মধ্যে আমরা দরপত্র সম্পন্ন করেছি, আমাদের কাজ চলছে। প্রায় ১০৩ কোটি টাকার অবকাঠামো উন্নয়নের কার্যক্রম আমরা হাতে নিয়েছি। পরবর্তীকালে হবে দীর্ঘমেয়াদী। আমরা মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করছি। সেটার আওতায় দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। সেটা হবে অত্যন্ত পরিকল্পিত। কারণ আমরা লক্ষ করি, অপরিকল্পিতভাবে যে ঢাকা শহর গড়ে উঠেছে, বর্ষা মৌসুমে যে বৃষ্টি হয়, তা ধারণ করার ক্ষমতা ঢাকা শহরের নেই। যে কারণে বৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জলাবদ্ধতা হতে থাকে’, যোগ করেন মেয়র শেখ তাপস।
জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান কার্যক্রমকে স্বল্পমেয়াদী উল্লেখ করে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘আমাদের এখন যে কার্যক্রম চলছে, সেটা স্বল্পমেয়াদী। বর্তমানে যে ধারণ ক্ষমতা আছে, যে অবকাঠামো আছে, সেখানে যেন অন্তত পানি যেতে পারে, নিষ্কাশন হতে পারে এবং পরবর্তীকালে নদীতে প্রবাহিত হতে পারে—আমরা এ পর্যন্ত যতটুকু করেছি, তাতে কিছু সুফল আমরা পাচ্ছি। কিন্তু, তার সঙ্গে সঙ্গে মধ্যমেয়াদী কার্যক্রমে আমাদের সফল হতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রমে আমাদের হাত দিতে হবে।’
এর আগে মেয়র শেখ তাপস নগরীর সিআইডি অফিসসংলগ্ন শান্তিনগরে অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র (এসটিএস) উদ্বোধন, মালিবাগ মোড় থেকে চানমারি পর্যন্ত ওয়াসার নর্দমা পরিদর্শন এবং পরবর্তীকালে কাজী আলাউদ্দীন সড়কের জলাবদ্ধতা নিরসন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী রেজাউর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো. বোরহান উদ্দিন, মুন্সি মো. আবুল হাশেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।