গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পুরোপুরি বিপন্ন : ডা. জাহিদ

Looks like you've blocked notifications!
অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দৈনিক দিনকাল বন্ধের প্রতিবাদে গণতন্ত্র ফোরাম আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন। ছবি : আয়োজক সংগঠন

‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এখন পুরোপুরি বিপন্ন’ উল্লেখ করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, সত্য লিখলে ওই গণমাধ্যম হয় বন্ধ করা হচ্ছে, না হয় সাংবাদিকদের ওপর জুলুম নির্যাতন নেমে আসছে।’

আজ সোমবার (১৩ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দৈনিক দিনকাল বন্ধের প্রতিবাদে গণতন্ত্র ফোরাম আয়োজিত সমাবেশে ডা. জাহিদ এসব কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, ‘বর্তমান সরকারের এপর্যায়ের শাসনকালে পঞ্চাশেরও বেশি সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। বহু সম্পাদক ও সাংবাদিককে দেশান্তরী হতে হয়েছে। দেশের শীর্ষ পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে খুনের মামলা। সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট, গুম-খুনের কথা যাতে প্রকাশ না পায়, সেজন্য দৈনিক দিনকাল বন্ধ করে দিয়েছে।’

ডা. জাহিদ আরও বলেন, ‘সাংবাদিকরা সত্য লিখতে গেলে, বিশেষ করে সরকারের বিপক্ষে যায় এমন খবর ছাপলে হয় গণমাধ্যম বন্ধ করে দিচ্ছে, না হয় সাংবাদিকদের ওপর জুলুম নির্যাতন নেমে আসছে।’ তিনি বলেন, ‘দেশে চলছে চরম দুঃসময়। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, যারা গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার, তারা সরকারি জুলুমের শিকার হয়ে কেউ গুম হচ্ছেন, কেউ পঙ্গু হচ্ছেন, অথবা চিরদিনের জন্য হারিয়ে  যাচ্ছেন।’

‘বাংলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী জনগণের ওপর ফ্যাসিবাদি জুলুম চালাচ্ছে’ উল্লেখ করে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, দেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমেই ফয়সালা হবে। ফয়সালা রাজপথেই হতে হবে। এই সরকার কোনো অবস্থাতেই পদত্যাগ করবে না। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমেই শেখ হাসিনা সরকারকে বিদায় করব। এই সংসদ বিলুপ্ত হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’

গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও ইসমাইল হোসেন সিরাজীর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, স্বাধীন ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মাদ রহমত উল্লাহ, সাবেক সংসদ সদস্য বিলকিস ইসলাম, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি রাশেদুল হক, ইঞ্জিনিয়ার হানিফ, ব্যারিস্টার ওবায়দুর রহমান টিপু, শাহ আবদুল্লাহ আল বাকি, আবদুর রহিম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘গণমাধ্যমকে হুমকি ও ভয় দেখিয়ে এবং সাংবাদিকদের হত্যা ও নির্যাতন করে কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা কালাকানুনের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন গণমাধ্যমের বিকাশ সাধিত হলেও দেশে একের পর এক গণমাধ্যম বন্ধ করা হচ্ছে। এই সরকারের সময় পাঁচ শতাধিক গণমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য লজ্জার।’

এই সাংবাদিকনেতা বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা ছিল বাংলাদেশের ভৌগোলিক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র। গণতন্ত্রে মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়। মানুষের স্বাধীনতার মূল শর্ত হচ্ছে বাক, চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার মধ্যে যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। কিন্তু স্বাধীনতা-উত্তর ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতাযুদ্ধের মূল-স্পিরিটের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলাকে স্তব্ধ করে দেয় একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা কায়েম করে। বর্তমান সরকার সেই একই নোংরা পথে হাঁটছে।’