গাজীপুরে বেতন-ভাতা ও বোনাসের দাবিতে ফের শ্রমিকদের বিক্ষোভ
গাজীপুরে বকেয়া বেতন ভাতা ও ঈদুল আজহার বোনাস পরিশোধ এবং বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে এক পোশাক কারখানার শ্রমিক ও কর্মচারী-কর্মকর্তারা ফের বিক্ষোভ করেছে।
আজ সোমবার এ বিক্ষোভ করা হয়। এ সময় তারা ঢাকা-গাজীপুর সড়ক প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে।
কারখানার শ্রমিক ও কর্মচারীরা জানান, গাজীপুর মহানগরীর বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) সামনে লক্ষীপুরা এলাকায় স্টাইল ক্র্যাফট পোশাক কারখানার শ্রমিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিক্ষোভের মুখে বকেয়া পাওনা আংশিক পরিশোধ করে গত ঈদুল আজহার আগে কারখানা ছুটি দেয় কর্তৃপক্ষ। কারখানায় প্রায় সোয়া চার হাজার শ্রমিক ও সাড়ে সাতশো কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছে। ঈদের ছুটির পর গত ১ সেপ্টেম্বর ওই কারখানা চালু হওয়ার কথা থাকলেও ওইদিন কারখানা চালু না করে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি বৃদ্ধির ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। কারখানা খোলার দিন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গত বছরের ডিসেম্বর মাসের বেতন এবং শ্রমিকদের গত জুন মাসের বেতনসহ ঈদুল আজহার বোনাস পরিশোধের কথা ছিল। এ নিয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে। বিষয়টি নিয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র, সচিব, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও বিজিএমইএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়। বৈঠকে কারখানা মালিকের সম্পত্তি বিক্রি করে শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনাদি পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত হলেও এ পর্যন্ত তা পরিশোধ করা হয়নি।
এদিকে, পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী কারখানার শ্রমিক ও কর্মচারী-কর্মকর্তারা আজ সকালে কাজে যোগ দিতে কারখানায় আসে। তারা কারখানার গেইটে তালা ঝুলতে দেখতে পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এ সময় তারা কারখানা খুলে দেওয়াসহ বকেয়া বেতন ভাতা ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবিতে কারখানার গেইটে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে সকাল ৯টার দিকে তারা কারখানার সামনে ঢাকা-জয়দেবপুর সড়কের উপর অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে সড়কের উভয় দিকে অ্যাম্বুলেন্সসহ শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ জালাল উদ্দিন বলেন, ‘শ্রমিক-কর্মচারীদের অসন্তোষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধকারীদের সড়কের উপর থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও তারা অবরোধ তুলে নেয়নি। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় শ্রমিক নেতারা ঘটনাস্থলে এসে আন্দোলনরতদের সঙ্গে আলোচনা করেন। আলোচনা শেষে বিষয়টি সমাধানের জন্য আগামী ৩০ কর্মদিবস পর্যন্ত ধৈর্য ধারণের জন্য অনুরোধ করলে আন্দোলনরতরা তা মেনে নেন। তারা বেলা ১১টার দিকে আন্দোলন স্থগিত করে সড়কের অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ও সড়কে আবার যানবাহন চলাচল শুরু হয়।