গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা : গাড়ির শোরুম বন্ধ করল ভোক্তা অধিদপ্তর

Looks like you've blocked notifications!
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড ভুইঘরের মাহমুদপুর এলাকায় অবস্থিত সামিয়া কার হাট। ছবি : এনটিভি

নারায়ণগঞ্জে সামিয়া কার হাট থেকে গাড়ি কিনে প্রতারিত হওয়ায় অভিযোগের ভিত্তিতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে গাড়ির শোরুমটি বন্ধ করে দিয়েছে। আজ সোমবার (২৭ মার্চ) বিকেলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড ভুইঘরের মাহমুদপুর এলাকায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সেলিমুজ্জামানের নেতৃত্বে অভিযানে ক্যাব প্রতিনিধি ও জেলা পুলিশের একটি টিম উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জের কার্যালয়ে একরামুল হক নামের একজন গ্রাহক অভিযোগ করেন, গত ১০ মাস আগে নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডস্থ সামিয়া কার হাট নামে প্রতিষ্ঠান থেকে ৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে একটি গাড়ি কিনেন। কিন্তু গাড়িটির মালিকানা ট্রান্সফার করে দেননি প্রতিষ্ঠানের মালিক। গাড়ি বিক্রির সময় বলেছিল রঙ একটা কিন্তু কাগজে আরেকটা। গ্রাহক কার বিক্রয় প্রতিষ্ঠানকে নাম ট্রান্সফার এর জন্য চাপ দিলে তারা ৮ লাখ টাকার গাড়ি ৬ লাখ টাকা দিয়ে দিবে বলে ফেরত দিতে বলে। এতে ভুক্তভোগী গ্রাহক প্রতিকার চেয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ভোক্তা অধিদপ্তর সামিয়া কার হাটকে লিখিত এবং মৌখিক জবাব দেওয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করেন। কিন্তু তারা দুটি তারিখ শুনানিতে উপস্থিত হননি।

তাই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ভোক্তা অধিকারের পরবর্তী নোটিশ অনুযায়ী আগামীকাল উভয় পক্ষকে শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

ভুক্তভোগী একরামুল হক এনটিভি অনলাইনকে জানান, আমি সৌদি আরব প্রবাসী। গতবছর রমজানের ৩ তারিখে দেশে এসেছিলাম। আসার পরে লোন নিয়ে একটি রিকন্ডিশন গাড়ি কিনলাম সাদিয়া কার হাট থেকে। দোকান কর্তৃপক্ষ বলেছে গাড়ির রং অরিজিনাল, সবকিছু ঠিক আছে।

কিন্তু গাড়িটি নেওয়ার পরে রাস্তায় চলাচলের সময় পুলিশ ধরার পরে জানা যায়, নম্বর প্লেট দুই নম্বর এবং গাড়ির রংও অরিজিনাল নয়। এ পর্যন্ত অনেকবার ট্রাফিক পুলিশকে জরিমানা দিতে হয়েছে। নাম ট্রান্সফার করে দিচ্ছে না। মালিকহীন ১০ মাস ধরে গাড়িটি চলাচল করছে আর পথে-ঘাটে দিতে হচ্ছে জরিমানা। তাই প্রতিকার চেয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করি।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জের সহকারী পরিচালক সেলিমুজ্জামান এনটিভি অনলাইনকে জানান, সামিয়া কার হাট থেকে একরামুল হক নামের একজন ভোক্তা গাড়ি ক্রয় করেছিলেন দশ মাস আগে। কিন্তু উনি যে গাড়িটি কিনেছিলেন নম্বর প্লেট দুটির সামনে একটি নম্বর পিছনে একটি নম্বর এবং যে কালারের কথা বলেছিল কাগজের সাথে সেই কালারের কোনো মিল নেই। গাড়িটি ক্রয় করেছিলেন ৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে এবং প্রায় এক লাখ টাকা খরচ করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত গাড়ির ক্রেতার কাছে নাম ট্রান্সফার করে দেয়নি। সে কারণে ভোক্তা অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সামিয়া কার হাট কর্তৃপক্ষকে প্রথম একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে আজকে দ্বিতীয় চিঠিতেও তারা শুনানিতে অংশগ্রহণ করেনি। তার পরিপ্রেক্ষিতে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর শোরুমটি বন্ধ করে দিয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) শুনানিতে দোকান মালিক কর্তৃপক্ষকে নারায়ণগঞ্জের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে।