ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং, খুলনার ২৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ
বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের প্রভাবে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’য়ের প্রভাবে খুলনার কয়রা, সাতক্ষীরার আশাশুনি ও শ্যামনগরের বেশ কিছু স্থানে নদীর বাঁধ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় ভেঙে নোনা পানিতে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় অধিকাংশ মানুষ নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। এছাড়া পানি নিস্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতায় মৎস্যঘের ও বিলের আমন চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কাও বিরাজ করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনা জোনের তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী মো: শফিউদ্দিন জানান, খুলনা উপকূলীয় এলাকায় ২৫০ কিলোমিটার বড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব এলাকায় স্থানীয় ইউপি সদস্য ও তাদের কর্মীরা পালা করে পাহারা দিচ্ছে। কয়রা উপজেলার হরিণখোলা ও গাতিরঘেরী নামক স্থানে বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। দুপুরের জোয়ারের আগে কাজ করতে না পারলে ফসল, ঘরবাড়ি সব নোনা পানিতে প্লাবিত হবে বলে জানান স্থানীয়রা। এই কাজে বিপুল পরিমান জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে ।
খুলনার কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কয়রার হরিণখোলা ও গাতিরঘেরীর বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের নিয়ে মেরামতের কাজের প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া কয়রায় হোগলা, দোশহালিয়া, মদিনাবাদ লঞ্চঘাট, ঘাটাখালী, গাববুনিয়ার, আংটিহারা, ৪ নং কয়রা সুতির গেট ও মঠবাড়ির পবনা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। প্রত্যেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে স্ব স্ব এলাকার বাঁধের দিকে খেয়াল রাখার জন্য। সাইক্লোন শেল্টারগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রাকৃতিক দূর্যোগে প্রাণহানি এড়াতে জেলার ২ লাখ ৭৩ হাজার ৮’শ ৫০ জনের জন্য ৪০৯ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রের মধ্যে দাকোপে ১১৮টি, বটিয়াঘাটায় ২৭টি, কয়রায় ১১৭টি, ডুমুরিয়ায় ২৫টি, পাইকগাছায় ৩২টি, তেরখাদায় ২২টি, রূপসায় ৩৯টি, ফুলতলায় ১৩টি ও দিঘলিয়ায় ১৬টি।
খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিশেষ কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে, তাদের যাতে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া যায়-সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবারের মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হবে।’