চিনিকলের যন্ত্রাংশ চোর ধরে মারধরের শিকার হাবিলদার!

Looks like you've blocked notifications!
ফরিদপুর চিনিকল (ইনসেটে উদ্ধার হওয়া মবিল পাম্প)। ছবি : এনটিভি

ফরিদপুর চিনিকল থেকে গোপনে ট্রাক্টরের মূল্যবান যন্ত্রাংশ নিয়ে যাওয়ার সময় গেটে পাহারারত হাবিলদারের হাতে ধরা পড়েন এক ট্রাকচালক। এ ঘটনায় উল্টো এক হাবিলদারকেই মারপিট করেছেন ট্রাকচালকরা। এতে সেখানে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।

চিনিকল সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার দিনগত রাতে চিনিকল থেকে চট্টগ্রামে রওনা হওয়া একটি ট্রাক গেট দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় পাহারারত আনসার সদস্য আব্দুর রহমানের নির্দেশে হাবিলদার শাহাজাহান ট্রাকটি থামিয়ে তল্লাশি করেন। এ সময় ট্রাকের টুলবক্সে টাক্টরে ব্যবহৃত একটি মবিল পাম্প পাওয়া যায়।

এ ঘটনা জানতে পেরে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ খবিরউদ্দিন মোল্লা ওই রাতেই ট্রাকচালককে তাৎক্ষণিক সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরে গতকাল বুধবার সকালে চিনিকলের অন্যান্য ট্রাকচালক এ ঘটনার পর ট্রাক চালাতে অস্বীকৃতি জানালে ওই সাময়িক বরখাস্তাদেশ তুলে নেওয়া হয়।

এরপর আনসার সদস্য আব্দুর রহমান অভিযোগ করেন, এ ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাঁকে অফিসে ডেকে নেন।

আব্দুর রহমান অভিযোগ করেন, এ ঘটনার পর ওই ট্রাকচালক তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং তাকে মারধরও করেন। বিষয়টি তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালককে জানিয়েছেন বলেও জানান।

আনসার সদস্য আব্দুল রহমানকে গালাগাল করে মারধরের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অন্য হাবিলদার ও আনসারদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ট্রাকচালক সালফার আনতে চট্টগ্রামের পথে থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

ট্রাকচালককে একজন ভালো মানুষ দাবি করে চিনিকল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আব্বাস আলী বলেন, ‘আমাদের চিনিকলের সব মবিল পাম্প লাল রং করা। কিন্তু উদ্ধার হওয়া পাম্পটি রং করা ছিল না। এ ধরনের মবিল পাম্প আমাদের চিনিকলে আমরা কখনো দেখিনি।’

শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ওই আনসার সদস্যকে মারতেও দেখেননি বলে জানান।

তবে মিলে কর্মরত অনেক শ্রমিক অভিযোগ করেন, দেশের ছয়টি চিনিকল বন্ধ হওয়ার পর সেখানকার অনেকে এই মিলে এসে চাকরি করছেন। চিনিকলের অনেক ট্রাক্টর, গাড়ি ও অন্যান্য মালামাল দীর্ঘদিন অযত্নে পড়ে আছে। সংঘবদ্ধ চোরেরা এসবের যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে বিক্রি করছে। তারা এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।

এ ব্যাপারে ফরিদপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ খবিরউদ্দিন মোল্যা বলেন, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ওই ট্রাক থেকে মবিল পাম্প উদ্ধারের পর সংশ্লিষ্ট চালককে সাময়িক বহিষ্কারের সত্যতা নিশ্চিত করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, গতকাল সব চালক ট্রাক চালাতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি কাজ চালু রাখার স্বার্থে তার সাময়িক বহিষ্কারের আদেশটি প্রত্যাহার করেন।

হাবিলদার আব্দুর রহমানকে গালাগাল করে মারধরের বিষয়টি জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক তা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, যেহেতু এ ঘটনায় তাঁর শাস্তি কিংবা বিচারের এখতিয়ার রয়েছে, তাই পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়নি।