চুরির অভিযোগে দুই যুবককে বেধড়ক পেটালেন কাউন্সিলর

Looks like you've blocked notifications!
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সহিদুল ইসলাম । ছবি : সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চুরির অভিযোগে মো. ফারুক ও মো. হারুন নামে দুই যুবককে নির্দয়ভাবে পিটিয়েছেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সহিদুল ইসলাম ওরফে সুমন বিন তাহের পাটওয়ারী। সহিদুল ইসলাম লক্ষ্মীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক। এর মধ্যে মায়ের সামনেই ফারুককে ব্যাপক মারধর করা হয়।

৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে, না হয় এলাকা ছাড়তে হবে, এমন শর্তে সাদা কাগজে সই নেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে।

আজ সোমবার দুপুরে ফারুকের মা আয়েশা বেগম কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর আগে গতকাল রোবার সন্ধ্যায় নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।

আহত ফারুক লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাঞ্চানগর এলাকার কালাগাজি বাড়ির ছেলে। অপর যুবক হারুনের বাড়িও একই এলাকায়। তারা পেশায় শ্রমিক। ফারুকের গালে ও পিঠে লাঠিসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, সম্প্রতি ওই এলাকায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চুরি হয়। রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সন্দেহজনকভাবে ফারুক ও হারুনকে ডেকে আনে কাউন্সিলর সুমন। এ সময় অটোরিকশা চুরির অভিযোগে ফারুক ও হারুনের কাছ থেকে জোরপূর্বক সাদা কাগজে টিপসই নেওয়া হয়। এর আগে তাদেরকে নির্দয়ভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। বিধবা আয়েশা বেগম তাঁর ছেলেকে রক্ষায় অনুনয় বিনয় করলেও কাউন্সিলর তা কানে তোলেননি। একপর্যায়ে কাউন্সিলর ৫০ হাজার টাকা দিতে বলেন। টাকা না দিতে পারলে এলাকাছাড়া করার হুমকি দেন। পরে আহত অবস্থায় ফারুক ও হারুনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

ফারুকের ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার ভাই কাজ থেকে ফেরার পথে চোর সন্দেহে কাউন্সিলর ডেকে নেয়। পরে কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট এলাকায় কাউন্সিলর সুমন তাঁর অফিসে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে তাকে লাঠি-বাঁশ-জিআই তার দিয়ে অমানবিকভাবে পিটিয়েছে। আমার ভাই কোনো চুরি করেনি। বিনা কারণে তিনি অবিচার করেছেন।’ 

কাউন্সিলর সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি মারধর করিনি। অটোরিকশা চুরির অপরাধে এলাকার লোকজন তাদেরকে মেরেছে।’ 

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। আহতেরা চুরির কথা স্বীকার করায় তাদের মারধর করলেও তা ঠিক হয়নি। কাউন্সিলরকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া অপরাধ।’ 

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, ‘রাতেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’