ছেলের নির্যাতনে হাসপাতালে কাতরাছেন মা, গৃহছাড়া বাবা

Looks like you've blocked notifications!
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় গর্ভের সন্তানের নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাছেন মা জহুরা বেগম। ছবি : এনটিভি

সন্তানের নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাছেন মা জহুরা বেগম (৬০)। অপরদিকে নির্যানের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বাবাও। হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের কিসমতলালপুর গ্রামে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ছেলের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন বৃদ্ধ মা জহুরা বেগম। তিনি কিসমত লালপুর গ্রামের তইজ উদ্দিনের স্ত্রী।

তইজ উদ্দিন জানান, জমির ভাগে কমবেশি হওয়ায় তাঁর ছেলে নবিউল ইসলাম গত বুধবার বিকেলে তার মাকে গালমন্দসহ শারিরক ভাবে নির্যাতন করেন। এই ঘটনা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাসহ সাংবাদিকদের মধ্যে জানাজানি হলে নবীউল ইসলাম আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মা জহুরাকে বেধড়ক মারপিট করেন। এতে তার মা গুরুতর আহত হলে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। বর্তমানে হাসপাতালের বেডে কাতরাছেন তিনি।

জহুরা বেগম জানান, তাদের বাড়িভিটাসহ ১৫৯ শতক জমি তিন ছেলে ও এক মেয়েকে হেবা করে দেন, কিন্তু হেবা করার সময় মেয়ের নাম দেওয়াকে কেন্দ্র করে তার ছেলে নবিউল ইসলাম তাদের উপর অত্যাচার শুরু করেন। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান কয়েক দফা বিচারও করেছেন। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে গত বুধবার বিকেলে বাড়িঘরে ভাঙচুর চালান নবিউল। এতে বাধা দিতে গেলে তাদের (বাবা তইজ উদ্দিন ও মা জহুরা বেগমকে) শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।

এই ঘটনা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিকে বলে দেওয়ায় বৃহস্পতিবার তার মাকে আবারও মারপিট করে গুরুতর আহত করেন নবিউল।

তইজ উদ্দিন বলেন তার স্ত্রী হাসপাতালে থাকলেও তিনি বাড়িতে যেতে পারছেন না ছেলের ভয়ে। তাকে পেলেও ছেলে নবিউল মারধর করবে। এজন্য তিনি এখন বাড়িছাড়া হয়ে পড়েছেন।

এই ঘটনার বিষয়ে নির্যাতনকারী নবিউল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের (পিতা-মাতা) মেয়েকে জমি দিয়েছে। সেখানে চলে যেতে হবে। এই বাড়িতে তাদের থাকার প্রয়োজন নাই।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে খয়েরবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক বলেন, কয়েক দফা বিচার করেও বিষয়টি সমাধান করা যায়নি। বিচার করার পরও নবিউল ইসলাম ও তার ভাইয়েরা তাদের মা-বাবার উপর অত্যাচার করে।

এদিকে ছেলের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালের বেডে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা জহুরা বেগম। তিনি এই ঘটনায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

নির্যাতনের শিকার জহুরা বেগমের স্বামী তইজ উদ্দিন বলেন তিনি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।