ঝিনাইদহে মসিউর রহমানের জানাজা বুধবার সকালে

Looks like you've blocked notifications!
মসিউর রহমান, ফাইল ছবি

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মসিউর রহমানের জানাজা আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। ঝিনাইদহের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে  সকাল ১১টার দিকে অনুষ্ঠিত হতে চলা জানাজায় এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত হতে শুরু করেছেন।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের নিজ বাসার দরজা ভেঙ্গে তাঁর অচেতন দেহ উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ছোঁয়া ইসরাইল তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রেখে গেছেন। 

জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক গণমাধ্যমকে জানান, মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে মশিউর রহমান অসুস্থতার কথা জানিয়েছিলেন। গাড়িচালক বাঁধন সাড়ে ৮টার দিকে বাসায় এসে ডাকাডাকি করতে থাকেন। ছোট ভাই আসাদুজ্জামান, প্রতিবেশি পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শেখর, ঘরের দরজা ভেঙ্গে মসিউর রহমানের নিথর দেহ উদ্ধার করেন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ছোঁয়া ইসরাইল মৃত ঘোষণা করেন।

ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মো. আব্দুল হাই তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বলেন, ‘১৯৬৭ সালে মেট্রিক পাশ করেন তারা। এরপর ঝিনাইদহ কেসি কলেজে ইন্টামেডিয়েট ক্লাসে ভর্তি হন। ১৯৭১ সালে পৃথকভাবে যুদ্ধে চলে যান।’

জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মজিদ, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন প্রমুখ শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

মসিউর রহমান বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ছিলেন। ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের কন্যাদহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। স্কুল জীবনে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতিতে যোগ দেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারতের বিহার রাজ্যের চাকুলিয়া থেকে ট্রেনিং নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ঝিনাইদহ মহাকুমা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রথম (১৯৭৬ থেকে ১৯৭৮ পর্যন্ত) কমান্ডার হন তিনি। 

৭৫ পরবর্তী বিএনপি গঠন হলে মসিউর যোগদান করেন। ১৯৭৭ সালে প্রথম হরিণাকুন্ডুর চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৮৭ সালে কারাগারে থেকে নির্বাচনে অংশ নেন এবং তৃতীয় বার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে চমক সৃষ্টি করেন। 

১৯৮৭ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় সাত মাস কারাভোগ করেন। এই নেতা ১৯৯১ সালে প্রথম দলীয় (বিএনপি) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সব মিলিয়ে চার বার সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। 

২০০৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের পক্ষ থেকে মসিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলায় ২০১৭ সালের অক্টোবরে যশোরের বিশেষ জজ আদালত তাঁকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, জরিমানাসহ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রায় প্রদান করেন। কিছুদিন কারাভোগের পর উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান তিনি।