টিকিট নেই বাস-লঞ্চে, ভরসা থ্রি হুইলার
ঈদের পরের দিনই উপচেপড়া ভিড় ছিল বাস টার্মিনাল ও লঞ্চঘাটে। টিকিট নেই বাস বা লঞ্চের কোনো কাউন্টারেই।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে বরিশাল লঞ্চঘাটে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রচুর মানুষ আসতে দেখা গেছে। যাদের গন্তব্য ছিল ঢাকা। এছাড়া দুপুরের পর বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ঢাকামুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল।
আগামীকাল শুক্রবার থেকে লকডাউন কার্যকরের খবরে আজকেই ঢাকামুখী হয়েছেন অধিকাংশ মানুষ। বাসে টিকিট না পেয়ে অনেকে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে মহাসড়কে অবৈধ থ্রি হুইলারে মাওয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদে গিয়ে কথা হয় সাকুরা বাস কাউন্টারের সামনে অপেক্ষা করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে।
সিদ্দিকুর বলেন, ‘জরুরিভাবে ঢাকা যাওয়া প্রয়োজন। তবে সব লঞ্চ কাউন্টারে ঘুরে এখন বাস কাউন্টারে এসেছি। কোনো টিকিট নেই। এখন বিকল্প চিন্তাভাবনা করছি।’
মাওয়ার উদ্দেশে থ্রি হুইলারে ওঠা যাত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘কোনো জায়গায় টিকিট পাইনি। এখন বাধ্য হয়ে এই থ্রি হুইলার মাহিন্দ্রাতে উঠেছি। জানি রিস্ক আছে, তবে কিছু করার নেই। যেতে তো হবে।’
থ্রি হুইলারের আরেক যাত্রী বলেন, ‘বাস ও লঞ্চে তো টিকিটই পাই নাই। ওটা সোনার হরিণ বর্তমানে। তাই ৮০০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছে প্রতিজন থ্রি হুইলারে। বাধ্য হয়ে এই যানেই যেতে হচ্ছে।’
বরিশালের সুন্দরবন, এডভেঞ্চার, সুরভী ও কীর্তণখোলা লঞ্চ কাউন্টার ঘুরে টিকিট না পাওয়া মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘কোনো কাউন্টারে টিকিট পাইনি। কিন্তু ঢাকা যেতেই হবে। কাল লকডাউন শুরু হলে চাকরি নিয়ে টানাটানি শুরু হবে আমার।’
ঈগল পরিবহনের কাউন্টার স্টাফ টালু দাস বলেন, ‘টিকিট অনেক আগে থেকেই বুকিং হয়েছে। কিছু টিকিট ছিল যা সকালেই শেষ হয়েছে। অনেক যাত্রী ভিড় করছে কিন্তু কাউকেই আর দিতে পারছি না।’
বরিশাল টু মাওয়া রুটের বি এম এফ পরিবহনের কাউন্টার স্টাফ চঞ্চল জানান, যাত্রীদের অনেক চাপ রয়েছে। অনেক যাত্রীকেই আমরা নিতে পারছি না শিডিউল অনুযায়ী। তাই যাত্রীরাও ক্ষিপ্ত।
সুন্দরবন লঞ্চের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুর রহমান পিন্টু বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে লঞ্চের টিকিট আগাম বিক্রি করা হয়েছে। কোনো টিকিটই নেই আমাদের কাছে। ডেক ছাড়া আমাদের কাছে কোনো কেবিনের টিকেট নেই।’
বরিশাল জেলা বাসমালিক গ্রুপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চলাচলের জন্য নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। যাত্রীর চাপ রয়েছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে যা করার দরকার সেটা করার চেষ্টা করছি আমরা।’