টিপ পরায় হেনস্তা : অভিযুক্তকে এখনও শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ

Looks like you've blocked notifications!
শেরেবাংলা নগর থানা। ছবি : সংগৃহীত

টিপ পরাকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে এক শিক্ষককে হেনস্তার অভিযোগ ওঠার পর এখন পর্যন্ত পুলিশের পোশাকধারী অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল বড়ুয়া গতকাল রোববার দিবাগত রাতে এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

উৎপল বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা এখনও ওই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পারিনি। তবে, তাকে শনাক্ত করার জোর চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থল ফার্মগেটের সেজান পয়েন্টের সামনে মেট্রোরেলের কাজ চলমান থাকায় পদচারী–সেতুটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ফলে ঘটনাস্থল এবং এর আশপাশে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া যায়নি।’

ওসি আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থল ও আশপাশে দায়িত্বরত বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এমন কাজ কেউ করেননি। আমরা নিশ্চিত হয়েছি ওই অভিযুক্ত ব্যক্তি সেখানে দায়িত্বরত ছিলেন না। তবে, অভিযোগকারীর দেওয়া মোটরসাইকেল নম্বরের মাধ্যমে আমরা তাঁকে শনাক্তের চেষ্টা করছি। এ ঘটনায় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশও তদন্ত করছে। আশা করছি, দ্রুত অভিযুক্তকে ধরে ফেলব।’

রাজধানীর ফার্মগেটের সেজান পয়েন্টের পাশে গত শনিবার সকালে টিপ পরা নিয়ে এক পুলিশ সদস্যের মাধ্যমে হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দার।

ঘটনার পরে শেরেবাংলা নগর থানায় অভিযোগ করেন ড. লতা সমাদ্দার। লিখিত অভিযোগে বলা হয়, শনিবার তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার বাসা থেকে রিকশায় করে ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের সামনে নামেন। সেখান থেকে হেঁটে কর্মস্থল তেজগাঁও কলেজের দিকে যাচ্ছিলেন। সেজান পয়েন্টের সামনে পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি মোটরসাইকেলের ওপর বসেছিলেন। তাঁর মোটরসাইকেলের নম্বর-১৩৩৯৭০।

লতা সমাদ্দার অভিযোগে উল্লেখ করেন, ‘পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কপালে টিপ পরা নিয়ে ওই ব্যক্তি আমাকে কটূক্তি করেন। একপর্যায়ে তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। পেছনে ফিরে ঘটনার প্রতিবাদ করায় তিনি আরও গালিগালাজ করেন। পরে পুলিশের পোশাক পরা ওই ব্যক্তি আমার গায়ের ওপর মোটরসাইকেল চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। সরে গিয়ে রক্ষা পেলেও শারীরিকভাবে আহত হই।’

ট্রাফিক পুলিশকে বিষয়টি জানালেও ব্যবস্থা না নিয়ে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেন বলে উল্লেখ করেছেন প্রভাষক লতা সমাদ্দার। তাঁর ভাষ্য, ‘ঘটনার আকস্মিকতায় আমি পাশেই দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশকে বিস্তারিত জানাই। সেখানে থাকা ট্রাফিক পুলিশের সদস্যেরা আমাকে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেন।’

জানতে চাইলে শেরেবাংলা নগর থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। কলেজে যাওয়ার পথে সেজান পয়েন্টের পাশে তাঁকে হেনস্থা করা হয় বলে জেনেছি। পরে তাঁকে হত্যাচেষ্টারও অভিযোগ তোলা হয়েছে। লোকটি পুলিশের পোশাক পরা ছিলেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।’

অভিযোগের বিষয়ে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘শিক্ষিকার অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি থানা পুলিশের না-কি ট্রাফিক বিভাগের, তা তদন্ত হচ্ছে।’