ডাচ-বাংলার আরও আড়াই কোটি টাকা উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৮

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীর মিন্টো রোডের ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আজ রোববার দুপুরে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তারদের হাজির করা হয়। ছবি : ডিএমপি

রাজধানীর উত্তরায় বেসরকারি ডাচ–বাংলা ব্যাংকের ছিনতাই হওয়া টাকার মধ্যে আরও ২ কোটি ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার উদ্ধার করা হয়েছে। ফলে, ছিনতাই হওয়া সোয়া ১১ কোটি টাকার মধ্যে উদ্ধার হলো ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

আজ রোববার (১২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ তথ্য জানিয়েছেন।

হারুন অর রশীদ বলেন, ‘গতকাল শনিবার আমরা রাজধানী ও সুনামগঞ্জ-সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করি। তাদের কাছ থেকে আমরা ২ কোটি ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার উদ্ধার করি।’

গত বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) উত্তরার দিয়াবাড়ির ১৬ নম্বর সেক্টরে ব্রিজের কাছে একটি গাড়ি থেকে ট্রাংকভর্তি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। মাইক্রোবাসটি মিরপুর ডিওএইচএস থেকে আশুলিয়ার দিকে যাচ্ছিল। যে গাড়িতে টাকা নেওয়া হচ্ছিল সেই গাড়িটি মানি প্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের।

হারুন অর রশীদ বলেন, ‘এ ঘটনার পর খিলক্ষেত এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা মিরপুর ও উত্তরা বিভাগ ঢাকা ও সুনামগঞ্জ-সিলেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। রাজধানীর বনানী থেকে সানোয়ার হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে ১ কোটি ১৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।’

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, এ ছাড়া বনানী থেকে মিলন ওরফে ইমন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তার জোয়ারসাহারার বাসা থেকে ৩২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। তা ছাড়া উত্তরা থেকে আকাশ ও সাগরকে গ্রেপ্তার করার পর তার বাসা থেকে ১ কোটি ৭ লাখ টাকা এবং একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া অপর একটি দল সুনামগঞ্জ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বদরুল আলম, মিজানুর রহমান, সোনাই ও এনামুল হক বাদশাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, ৮ মার্চ একটি হায়েস মাইক্রোবাস সিলেট যাওয়ার উদ্দেশে ভাড়া করা হয়। ৯ মার্চ ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে কুর্মিটোলাতে চালক চলে আসেন। আসামিরা তাকে পেছনের সিট ঠিক করার কথা বলেন। সিট ঠিক করতে গেলে তার হাত-পা-চোখ বেঁধে ফেলা হয়। এরপর আসামিরা গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ব্যাংকের টাকা লুট করার উদ্দেশে। আসামিদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, তারা নির্দিষ্ট নম্বরের গাড়িকে ফলো করতে থাকে। তারা এ গাড়ি বহুদিন ধরেই অনুসরণ করছিলেন। মানি প্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের এই গাড়িতে টাকা আনা-নেওয়া করা হয়, তাদের কাছে কোনো অস্ত্র থাকে না; সিকিউরিটি থাকে না; এটা তারা অনুসরণ করছিলেন।

ডিবি জানায়, তারা মিরপুর ডিওএইচএস থেকে রওনা দেয়। একবার গাড়ির সামনে যায়, একবার পেছনে যায়। এভাবে নির্জন স্থানে যাওয়ার পর দুটি গাড়ির মধ্যে ধাক্কা লাগে। তখন ধাক্কা দেওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। সে সময় আসামিরা গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। তারপর তারা দূরে চলে যায়। সেখানে গিয়ে তারা সুপারভাইজারকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে টাকাগুলো নিয়ে ৩০০ ফিট এলাকার নির্জনে চলে যায়। তখন টাকার ট্র্যাংকগুলো নিয়ে গাড়ি ফেলে চলে যায়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জানিয়েছে, দুটি ট্রাংক ভেঙে দুটি চালের বস্তা ও পাঁচটি ব্যাগ ভর্তি করে এবং তাদের কাছে আর ব্যাগ না থাকায় টাকা দেখে ভয় পেয়ে টাকা ফেলে চলে যায় বলে জানান হারুন অর রশীদ। আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ডে নিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এখন পর্যন্ত মোট ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।