ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাতে যা বলল বিএনপি

Looks like you've blocked notifications!
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে তার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপিনেতারা। ছবি : এনটিভি 

নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার বন্ধ এবং রমজান মাসজুড়ে ইফতার অনুষ্ঠান সফলভাবে আয়োজন করতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সহযোগিতা চেয়েছে বিএনপি।

আজ বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান এবং দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম।

আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিনা ওয়ারেন্টে এবং মামলা ছাড়াই বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে ঢাকা মহানগর বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও যা করা হয়েছিল, ঠিক একইভাবে বর্তমান আওয়ামী সরকারের অন্যায় নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’

সাবেক ছাত্রনেতা আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘ডিএমপি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাতে বিনা ওয়ারেন্টে এবং মামলাবিহীন নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার বন্ধের কথা বলেছি। যদি কারো নামে মামলা থাকে, মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থেকে থাকে; সেক্ষেত্রে গ্রেপ্তার করা হলে আমাদের আপত্তি নেই। অন্যথায়, বিনাকারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হয়রানি করতে গ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে।’

বিএনপি নেতা আমান বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ রক্ষায় রেস্টুরেন্ট কিংবা বিয়ে-শাদির অনুষ্ঠান থেকেও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তা বন্ধ করতে পুলিশ কমিশনারকে বলেছি। এছাড়া রমজান মাসে প্রতি বছরের মতো ঢাকা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করতে যাচ্ছি, সেই উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছি—

যেন ইফতার মাহফিলগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়। পুলিশ কমিশনার আমাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন—তিনি বিষয়গুলো দেখবেন।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন বিএনপি মেনে নেবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য আমরা রাজপথে আন্দোলন করছি। রাজপথেই আন্দোলনের মাধ্যমে সমাধান করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব। তাই সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি—নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা এবং গ্রেপ্তার বন্ধ করুন। তারপরও পুলিশ যদি নিরপেক্ষ না হয়, সেক্ষেত্রে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘বিএনপি এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের অহেতুক হয়রানি করা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এই বিষয়ে অবহিত করতেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি, কথা বলেছি। সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়া কাউকে হয়রানি ও গ্রেপ্তার করা যাবে না, সে কথা বলেছি।’

আবদুস সালাম বলেন, ‘সম্প্রতি ঢাকা মহানগর থেকে যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা সবাই হাইকোর্ট, জজকোর্ট থেকে জামিনে মুক্ত ছিল। তারপরও তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। কখনো কখনো পুরনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’

বিএনপি নেতা সালাম বলেন, ‘আমরা পুলিশ কমিশনারকে বলেছি—বিনা কারণে শুধু বিএনপি করার ফলে যদি গ্রেপ্তার করতে হয়, তাহলে একটা সময় নির্ধারণ করে দেন, আমরা সবাই এসে আপনাদের কাছে ধরা দেব। কারণ বিএনপি কোনো আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনৈতিক দল নয়। বিএনপি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। বেশ কয়েকবার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। কাজই বিএনপির নেতাকর্মীরা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবে না, তা কখনও হতে পারে না। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিকে কাবু করতে অহেতুক চেষ্টা বন্ধ করুন।’

আবদুস সালাম বলেন, ‘আমরা পুলিশ কমিশনারকে এ কথাও বলেছি—তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন আমরা চাই না। আপনার অবস্থান থেকেও আওয়ামী লীগ ও সরকারকে বলেন—দেশটাকে যেন অস্থিতিশীলতার দিকে না নিয়ে যায়।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক।