তথ্য গোপনের অভিযোগ : হাজী সেলিমের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ৯ মার্চ আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। তবে, একই মামলায় তথ্য গোপনের অভিযোগে তিন বছরের দণ্ড থেকে খালাস পান তিনি। এর বিরুদ্ধে আপিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান আজ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘তিন বছরের সাজা থেকে হাজী সেলিমকে হাইকোর্ট খালাস দিয়েছিলেন। এর বিরুদ্ধে আমরা আপিল করেছি।’
এদিকে, রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দিয়েছিলেন।
ওইদিন রায় ঘোষণার পর আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছিলেন, ‘দুদক আইনে (২৬ এর ২ ধারা) করা মামলায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালত তিন বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন। সেই অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় হাজী সেলিমকে তথ্য গোপনের অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, দুদক এ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি।’
কিন্তু, দুদক আইনের ২৭ (১) ধারা অনুযায়ী জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালত ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন। ওই অভিযোগে তাঁর সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশের রায় দেন আদালত।
এরপর বিচারিক আদালত যেদিন হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পাবেন, সেদিন থেকে ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। আর আত্মসমর্পণ না করলে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে বলা হয়। একইসঙ্গে যেসব সম্পত্তি নিয়ে এ সাজা দেওয়া হয়েছে, তা বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে নিতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
২০২০ সালের ১১ নভেম্বর এ মামলার বিচারিক আদালতে থাকা যাবতীয় নথি (এলসিআর) তলব করেছিলেন উচ্চ আদালত। সে আদেশ অনুযায়ী নথি আসার পর আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়।
২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাঁকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তাঁর সাজা বাতিল করেন।
পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।