তিন গ্রামের ৯ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের আগুন, আতঙ্কিত এলাকাবাসী
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে রাতের আঁধারে তিন গ্রামের নয়টি বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে পুড়ে গেছে গবাদিপশুসহ বাড়ির আসবাবপত্র। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এমন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ভান্নারা পশ্চিমপাড়ার কুলছুম ও রবিউল দম্পতি হাঁস-মুরগি ও ছাগল পালন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। প্রতিদিনের মতো গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঘরের মধ্যে হাস-মুরগি ও ছাগল বেঁধে পাশের ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।
মধ্যরাতে হঠাৎ ছাগলগুলোর চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায় ওই দম্পতির। ঘর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করে বাহির থেকে ঘরের দরজা আটকানো দেখতে পান। জানালা দিয়ে দেখতে পান পাশের ঘরে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। পরে পরিবারের সবার চিৎকারের প্রতিবেশীরা এসে দরজা খুলে দেয় এবং পাশের ঘরে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। ততক্ষণে ঘরসহ সব আসবাবপত্র, পাঁচটি ছাগল ও আট মণ ধান পুড়ে ছাই হয়ে যায় ।
ক্ষতিগ্রস্ত কুলসুম বেগম জানান, প্রতিবেশীরাসহ সবাই মিলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। এরই মধ্যে পাঁচটি ছাগল, ১৫-১৬টি মুরগি ও আট মণ ধানসহ সব আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। দুটি ছাগলের শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেলেও এখনও জীবিত রয়েছে।
কুলসুমের স্বামী রবিউল ইসলাম জানান, তাদের ঘর বাইরে থেকে আটকানো ছিল। এমন ঘটনায় গ্রামের সবাই ভয়ে আছে।
ধোপাচালা গ্রামের আয়নাল হকের বাড়িতে গিয়েও দেখা যায়, তার একটি মিনি গার্মেন্সের মালামাল রাখার ঘরে আগুন দেওয়ায় পুড়ে গেছে বেশ কিছু ফেব্রিক্স ও এক্সেসরিজ।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। এ সময় নাশকতামূলক কাজের সঙ্গে জড়িত অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার আশ্বাস দেন তারা ।মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন জানান, গত তিন-চার দিন আগেও উপজেলার মৌচাক ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বামনবাগ এলাকায় একইভাবে তিন বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটায় দুর্বৃত্তরা। কোনো মাদকসেবী চক্র অথবা কোনো নাশকতাকারী চক্র এ কাজ করছে কি না, তা প্রশাসনকে খতিয়ে দেখাসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম আজাদ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে যতদ্রুত সম্ভব আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। পাশাপাশি নাশকতার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’ ইতোমধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বলেও জানান তিনি।