থমথমে বান্দরবান সীমান্তের গ্রাম, নিরাপত্তা জোরদার

Looks like you've blocked notifications!
ছবি : সংগৃহীত

বান্দরবানে আতঙ্কে ঘুমধুম, দৌছড়ি ও সোনাইছড়ি ইউনিয়নের সীমান্তের অধিবাসীরা। সীমান্তজুড়ে বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তবে, আজ বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সীমান্তের কোথাও কোনো গোলাগুলি, মাইন, মর্টারশেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়নি বলে জানিয়েছেন সীমান্তের বাসিন্দারা। 

জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়সূত্রগুলো জানায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম, সোনাইছড়ি এবং দৌছড়ি ইউনিয়নের মিয়ানমার সীমান্তজুড়েই আতঙ্কিত সীমান্তবাসী। ল্যান্ডমাইন ও মর্টারশেল বিস্ফোরণে ঘুমধুম, তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, রেজু-আমতলী, ফাত্রাছিরি, তুইঙ্গাঝিরি, দৌছড়ি, চাকঢালা, আষাঢ়তলী, ছনখোলা সীমান্তে একের পর এক হতাহতের ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সীমান্ত সুরক্ষায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। বাড়ানো হয়েছে টহলও। গ্রামগুলোতে অবস্থান নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

এদিকে, দৌছড়ি ইউনিয়নের সীমান্তের ছেরারকুল এলাকায় জিরো পয়েন্টে মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি আব্দুল কাদেরের ডান পা বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি দৌছড়ি ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের ছনখোলার বাসিন্দা মীর আহমেদের ছেলে। 

ঘটনাস্থলের পাশের চাকঢালা সীমান্তের ৪৫ ও ৪৬ নম্বর সীমান্ত পিলারের কাছাকাছি আজ আরও কয়েকটি মাইন বিস্ফোরণের খবর ছড়িয়ে পড়লেও দায়িত্বশীল কোনো সূত্রই বিষয়টি স্বীকার করেনি। বিষয়টি গুজব বলে দাবি করে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরুল আবছার জানান, মাইন বিস্ফোরণে গতকাল একজন আহত হয়েছিল। তবে, ঘটনাস্থল সদর ইউনিয়নের চাকঢালা এবং দৌছড়ি ইউনিয়নের ছেড়ারকুল সীমান্তের মাঝামাঝি জিরো পয়েন্টে ঘটেছিল। এরপর চাকঢালা সীমান্ত এলাকায় আজ কোনো মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি। উড়ো খবর শুনেই অনেকে গুজব ছড়াচ্ছে।  

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ ও দৌছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এমরান জানান, আতঙ্কে রয়েছে সীমান্ত অঞ্চলের মানুষ। গোটা সীমান্ত পরিস্থিতিই এখন অনেকটাই থমথমে। তাই বিজিবির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তবে, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সীমান্ত এলাকায় কোথাও গোলাগুলি এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়নি।

প্রসঙ্গত, গত ২ অক্টোবর তুমব্রু সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে মাইন বিস্ফোরণে ওমর ফারুক নামে এক রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু হয়। এ সময় সাহাবুল্লাহ নামে আরও একজন রোহিঙ্গা যুবক আহত হন। এরা দুজন তুমব্রু কোনাপাড়া নোম্যান্সল্যান্ড আশ্রয় কেন্দ্রের রোহিঙ্গা। 

এর আগে গত মাসের ১৬ সেপ্টেম্বর তুমব্রু সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি অংখ্যথাইন তঞ্চঙ্গ্যার বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার বাড়ি ঘুমধুম ইউনিয়নের হেডম্যানপাড়ায়। তার আগে তুমব্রু সীমান্তের জিরো পয়েন্টে মাইন বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গার পা উড়ে যায়। এভাবে সীমান্তে একের পর এক ঘটছে মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা।