দুর্যোগ মোকাবিলার জন্যই গাছ লাগান আখতার

Looks like you've blocked notifications!
দিনাজপুরে প্রকৃতির সেবায় গাছ লাগিয়ে যাচ্ছেন বৃক্ষপাগল খ্যাত আখতার হামিদ। ছবি : এনটিভি

দিনাজপুর বন বিভাগের ক্যাশিয়ার পদে চাকরি করেন তিনি। চাকরির দায়িত্বের বাইরেও প্রকৃতির সেবা করাও যেন তাঁর দায়িত্বে পরিণত হয়েছে। বলছিলাম, দিনাজপুরের বৃক্ষপাগল খ্যাত আখতার হামিদের কথা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার পাশাপাশি সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে দিনাজপুরের পথে-প্রান্তরে গাছ লাগাচ্ছেন তিনি। গত আগস্ট থেকে রাস্তার ধারে শুরু হয় তাঁর তালগাছ রোপণের পরিকল্পনা। প্রায় এক হাজার তালগাছের চারা রোপণের পরিকল্পনা রয়েছে আখতার হামিদের।

জানা গেছে, গত ২৮ আগস্ট দিনাজপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনের রাস্তা থেকে দেওয়ানবাগ মসজিদ পর্যন্ত সারিবদ্ধভাবে ৬৩টি, ১১ সেপ্টেম্বর রামসাগর জাতীয় উদ্যানের প্রবেশ গেইটের রাস্তার দুইধারে ২৫০টি, ১২ সেপ্টেম্বর এলজিইডি ব্রিজ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পেছনের ঘাঘরা ক্যানেলের ধারে সারিবদ্ধভাবে ৭২টি, ওয়াপদা ব্রিজের পাশে ৬৫টি, ১৪ সেপ্টেম্বর মিশন রোড থেকে ওয়াপদা ব্রিজ পর্যন্ত ৫০টি তালগাছের চারা রোপণ করেছেন আখতার হামিদ। এভাবেই প্রতি ছুটির দিনে সদর উপজেলার বিভিন্ন সরকারি রাস্তার দুইধারে তালগাছের চারা রোপণ করে চলেছেন তিনি। থেমে নেই এখনও।

শুধু তালগাছের চারা রোপণ করেই ক্ষান্ত হননি। এ পর্যন্ত বিভিন্ন জাতের ফলদ বৃক্ষের পাঁচ শতাধিক চারাও বিতরণ করেছেন আখতার হামিদ। একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়েও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে অফিস শেষে বা অবসর দিনে গাছের চারাগুলো রোপণ করে চলেছেন তিনি।

আখতার হামিদ বলেন, ‘ছোট বেলা থেকে আমার মা-বাবা গাছ লাগানোর উৎসাহ দিতেন। আমার বাবা সরকারি রাস্তার ধারে আমাকে নিয়ে গাছ লাগাতেন। তাছাড়া আমি বন বিভাগে চাকরির সুবাদে গাছ লাগানোর সুযোগও পেয়েছি। ছুটির দিনে যেখানে চাকরি করেছি সেখানেই গাছ লাগিয়েছি মানুষের সহযোগিতা নিয়ে। কিছুদিন আগে দিনাজপুরে বজ্রপাতে একদিনে সাত শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এতে আমার তাল গাছ লাগানোর প্রবণতা বেড়ে গেছে। একদিন মানুষের উপকারে আসবে। অনেককেই গাছ লাগানোর জন্য ফেসবুকে উৎসাহিত করি।’

আখতার হামিদ জানান, বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন ঘটছে। আমাদের দেশে গাছ লাগানোর খুব দরকার। পাশাপাশি অক্সিজেন, ফল-ফুল, সৌন্দর্য সবই বৃদ্ধি পায়। নিজের স্মৃতি কিছুটা হলেও থাকবে। এটা সওয়াবের এবং আনন্দের কাজ।

আশা ভরা কণ্ঠে আখতার বলেন, ‘তিনি যতদিন পৃথিবীতে থাকবেন, ততদিন গাছ লাগিয়ে যাবেন।’