দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, রুখে দাঁড়াতে হবে : মির্জা ফখরুল

Looks like you've blocked notifications!
রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে আজ শনিবার বিকেলে বিভাগীয় গণসমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : এনটিভি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি আন্দোলন করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর জন্য নয়; মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য। গত দুটি নির্বাচনে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। নতুন তরুণ ভোটাররা ভোট দিতে পারেনি।  তাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলন করছি আমরা।

রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে আজ শনিবার বিকেলে বিভাগীয় গণসমাবেশে ফখরুল এসব কথা বলেন। সকাল পৌনে ১১টার দিকে বিএনপির এই গণসমাবেশ শুরু হয়।

রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশার সভাপতিত্বে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গ্রামে পাতিনেতাদের দৌরাত্ম্যের কারণে টেকা যায় না।  আর কতকাল মানুষ কষ্ট করবে? আজকে মানুষের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। ক্ষমতাসীনরা সব কিছু লুটে নিয়ে নিয়ে গেছে বিদেশে। আর বলে মেগা উন্নয়ন করছে।’

ফখরুল বলেন, ‘১০ টাকার চাল নেই, ঘরে ঘরে চাকরি নেই। কৃষকেরা ফসলের দাম পায় না। বিনামূল্যে সার পায় না। সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে। আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।  আমরা যদি রুখে দাঁড়াতে  না পারি , ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সেই অর্জন নষ্ট হয়ে যাবে।’

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এবার শেখ হাসিনাকে পতদ্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ গঠন হবে।’

‘সরকার পরিকল্পিতভাবে অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, রাজনীতি ধ্বংস করছে’ উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান জাতীয় সরকারের কথা বলছেন। বাংলাদেশে জাতীয় সরকার গঠন হবে। দেশে নতুন দিগন্তের সূচনা করতে হবে। অর্থনীতিকে চাঙা করে তুলতে হবে। তাই জেগে উঠতে হবে, দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন ঘটাতে হবে।’

নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশের অনুমতি দেওয়া না দেওয়ার প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘নয়াপল্টনেই আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে সমাবেশে করেছি। লাখ লাখ লোকের সমাবেশ হয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ হলে আওয়ামী লীগের তক্তপোষ উপড়ে যাবে। জনগণের প্রতি তাদের আস্তা নাই বলে আওয়ামী লীগ প্রতি মুহূর্তে ভয় পায়, ক্ষমতা বুঝি এই গেল এই গেল।’ 

জঙ্গির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপিকে ধরার জন্য যখন মনে হয় জঙ্গি তৈরি করে। আওয়ামী লীগ নিজেরা অগ্নিসন্ত্রাস করে বাস পোড়ায়, আর বলে বিএনপির লোকেরা নাকি এসব করেছে।’

বিএনপির সমাবেশ ঘিরে পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পুলিশ ভাই, আপনারা কি এদেশের সন্তান নন, দেশের মানুুষের ট্যাক্সের টাকায় আপনাদের বেতন হয় না? অসহায় নিরীহ মানুষের ওপর অত্যাচার চালাবেন না, মানুষ সহ্য করবে না।’

অর্থনীতির প্রসঙ্গে টেনে ফখরুল বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিকে তলানিতে নিয়ে গেছে সরকার। মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা লুট করে কানাডাতে পাচার করছে সরকার দলীয় লোকেরা।  গত ১০ বছরে ১৯ লাখ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে।’ 

গণসমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘১২ হাজার নতুন কোটিপতি হয়েছেন, সাড়ে তিন কোটি হয়েছেন অতি দ্ররিদ্র। কার উন্নয়ন করেছে সরকার? হালাল উপার্জন করে কে শান্তিতে আছে? একজন মানুষ বের করুন। তাই সাধারণ মানুষ পরিবর্তন চায়। সেই আসায় কোনো বাধা দিয়ে মানুষকে সমাবেশে আসতে আটকে রাখতে পারছেন না।’

নজরুল বলেন, ‘আমাদের নানাভাবে উসকানি দিচ্ছে। আমাদের নেতাকর্মী মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা যাতে প্রতিবাদ করি, যাতে তারা দেখাতে পারে—আমরা উচ্ছৃঙ্খল। অথচ আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছি। রক্ত চক্ষু দেখে আমরা ভয় পাই না, বন্দুক নিয়ে ৫০ বছর আগে যুদ্ধ করেছি।’