দেশের প্রথম ৬ লেনের কালনা সেতুর টোল নির্ধারণ

Looks like you've blocked notifications!
নড়াইলের কালনা সেতু। ছবি : এনটিভি

দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা সেতুর মূল কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে লাইটিংয়ের কাজ। দিনে যানবাহন চলাচলের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত সেতু। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তারিখ ঘোষণা হলেই চূড়ান্ত হবে উদ্বোধনের দিন। তার আগে নির্ধারণ করা হলো টোল হার। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে বাস, ট্রাক, কৃষিকাজে ব্যবহৃত যানসহ আছে রিকশা, ভ্যান, বাইসাইকেলের টোলও। সে হিসেবে এই ছয় লেনের সেতুতে রিকশা, ভ্যান, বাইসাইকেল চলাচলের অনুমোদন থাকছে।

কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান আজ বুধবার এনটিভি অনলাইনকে এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘৩০ আগস্টের মধ্যে সেতুর মূল কাজ শেষ হয়েছে। লাইটিংয়ের কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার পরপরই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে সেতু।’

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে কালনা সেতু নির্মিত হয়েছে।

কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘কালনা দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) সেতু এটি। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার এবং প্রস্থ ২৭ দশমিক এক মিটার। উভয় পাশে ছয় লেনের সংযোগ সড়ক প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় প্রায় ৯৬০ কোটি টাকা।

গত ৭ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপ’-এ অংশ নিয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সম্মতি পেলে অক্টোবরের যে কোনো দিন সেতুটি উদ্বোধন হবে।

এদিকে, উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছেন সেতু কর্তৃপক্ষসহ গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার কোটি কোটি মানুষ। মুখিয়ে আছেন যাত্রীবাহী বাসসহ অন্যান্য যানবাহন সংশ্লিষ্টরা। এই সেতু উদ্বোধন হলে এসব অঞ্চলের মানুষের জনজীবনে আসবে অভাবনীয় গতি বলে মনে করছেন তাঁরা।

যশোর জেলা পরিবহণ সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা মিঠু বলেন, ‘কালনা সেতু চালু হলে যশোর, বেনাপোল, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, মাগুরাসহ পাশের জেলাগুলোর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বদলে যাবে। খুব সহজেই রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যাতায়াত করা যাবে। আমরা কালনা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছি।’

সেতুর টোলের হার

প্রকল্প ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান জানান, কালনা সেতু পার হতে বড় ট্রেইলারের জন্য পরিশোধ করতে হবে ৫৬৫ টাকা। তিন বা ততোধিক এক্সসেল বিশিষ্ট ট্রাকের টোল ধরা হয়েছে ৪৫০ টাকা। এ ছাড়া দুই এক্সসেল বিশিষ্ট মিডিয়াম ট্রাক ২২৫ টাকা, ছোট ট্রাক ১৭০ টাকা, কৃষিকাজে ব্যবহৃত পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর ১৩৫ টাকা, বড় বাসের ক্ষেত্রে ২০৫ টাকা, মিনিবাস বা কোস্টার ১১৫ টাকা, মাইক্রোবাস, পিকাপ ৯০ টাকা, প্রাইভেটকার ৫৫ টাকা, অটোটেম্পু, সিএনজি অটোরিকশা, অটোভ্যান ও ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যান ২৫ টাকা, মোটরসাইকেল ১০ টাকা এবং রিকশা, ভ্যান ও বাইসাইকেল পাঁচ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

উদ্বোধনের পর প্রথমে ম্যানুয়্যাল পদ্ধতিতে আদায় করা হবে টোল। পরে ব্যবস্থা করা হবে ডিজিটাল পদ্ধতির। এক্ষেত্রে প্রায় একমাস সময় লাগবে।