নওগাঁয় ধর্ষণের পর শিশু শাকিলাকে হত্যা

Looks like you've blocked notifications!
নওগাঁয় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করছেন পুলিশ সুপার মো. আবদুল মান্নান মিয়া । ছবি : এনটিভি

নওগাঁর মান্দায় ছোট্ট দুই সহপাঠীর দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে শিশু শাকিলা আক্তারকে ধর্ষণ ও খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে জড়িত বখাটে কিশোর জুয়েল রানাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ রোববার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ বলছে, শিশুটিকে কৌশলে বাঁশঝাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এরপর ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ার ভয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করে বখাটে জুয়েল রানা (১৭)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে সে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে খুনের বেশকিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। আটক হওয়া জুয়েল রানার বাড়ি উপজেলার ভালাইন ইউনিয়নের পশ্চিম লক্ষ্মীরামপুর গ্রামে। এ ঘটনায় নিহত শিশুটির বাবার করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার বিকেল ৪টার দিকে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশু শাকিলা। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বাড়ির অদূরে একটি বাঁশঝাড় থেকে তার লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। পরে শিশুটির লাশ ময়নতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।

শিশু শাকিলার সহপাঠী জুনায়েদ হোসেন, তাওহিদ ইসলাম জানায়, গতকাল বিকেলে শাকিলাসহ তারা কয়েক বন্ধু মিলে খেলাধূলা করছিল। পরে তারা বাড়ি চলে গেলে শাকিলা একাই সেখানে থেকে যায়। যাওয়ার সময় ওই বাঁশঝাড়ের কাছে জুয়েল রানাকে ঘোরাফেরা করতে দেখেছে তারা। এরপর পর থেকে শাকিলাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না বলে জানায় শিশুরা।

নিহত শিশুর মা বলেন, ‘প্রতিবেশীরবাড়িতে মিলাদের অনুষ্ঠান চলছিল। মিলাদের আয়োজনে ব্যস্ত ছিল গ্রামের লোকজন। অনুষ্ঠানে আশপাশের শিশুরাও ছুটাছুটি করছিল। শাকিলাও তাদের সঙ্গে ছিল। এ জন্য তাকে চোখে চোখে রাখার তেমন প্রয়োজন মনে করিনি। সামান্য এ অবহেলায় নাড়িছেঁড়া ধনকে আজ হারাতে হলো। আমি জুয়েলের ফাঁসি চাই।’ 

স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুন-অর-রশীদ বলেন, শনিবার বিকেল ৪টার পর হঠাৎ করেই শিশুটি নিখোঁজ হয়। তাকে মিলাদ বাড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ইফতারের সময় মিলাদ বাড়ির অদূরে একটি বাঁশঝাড়ে তার মরদেহ পাওয়া যায়। শিশুটি সেখানে নগ্ন অবস্থায় পড়ে ছিল। মুখে ঢোকানো ছিল কাপড়। অবস্থা দেখে শিশুটির সঙ্গে খারাপ কিছু হয়েছে বলেও ধারণা করেছিলেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, সন্দেহের সূত্র ধরে জুয়েল রানাকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে সে। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে খুনের বেশকিছু আলামত উদ্ধার করা হয়।

এদিকে, আজ রোববার দুপুরে এ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নওগাঁ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আবদুল মান্নান মিয়া জানান, গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে ধর্ষণের পর শিশু শাকিলাকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে ধর্ষক জুয়েল রানা।

সংবাদ সম্মেলনে নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) কে এম এ মামুন খান চিশতি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) গাজিউর রহমান, নওগাঁ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাবিনা ইয়াসমিন, মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।